শনিবার, ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ০৫:৪৭ অপরাহ্ন
সংবাদ নারায়ণগঞ্জঃ- ফতুল্লা থানায় একটি অপহরণ মামলার ৬ বছর পর অপহৃত যুবক মামুন আদালতে হাজির হয়েছেন। অথচ পুলিশ তাদের প্রতিবেদনে উল্লেখ করেছেন, ওই অপহৃতকে হত্যার পর লাশ গুম করে শীতলক্ষ্যায় ফেলে দিয়েছে। কিন্তু হত্যার পর লাশ শীতলক্ষ্যায় ফেলে দেয়া যুবক ফিরলেন ৬ বছর পর।
আর সিআইডি তাদের দেয়া চার্জশীটে বলেছেন, যুবককে অপহরণ করা হয়েছে। এসব কারণে গত ৪ বছর ধরেই মামলার আসামি হয়ে বিভিন্ন সময়ে কারাভোগ ও রিমান্ডের শিকার হয়েছেন খালাতো বোন সহ ৬ জন। মামলাটির বিচার কাজও সম্পন্নের পথে ছিল। এ অবস্থায় ৩০ সেপ্টেম্বর বুধবার দুপুরে নারায়ণগঞ্জ আদালতপাড়ায় কথিত অপহৃত হাজির হলে দেখা দেয়া চাঞ্চল্য। কথিত অপহৃত মামুন ফতুল্লার লামাপাড়া এলাকার আবুল কালামের ছেলে।
আদালত সূত্রে জানা গেছে, ২০১৪ সালের ১০ মে মামুন অপহরণ হয়েছে অভিযোগ এনে দুই বছর পর ২০১৬ সালের ৯ মে ফতুল্লা মডেল থানায় মামলা করেন বাবা আবুল কালাম। ওই মামলায় ৬ জনকে বিবাদী করা হয়।
বিবাদীরা হলো তাসলিমা, রকমত, রফিক, সাগর, সাত্তার, সোহেল। মামলার পর পুলিশ অভিযুক্ত ৬ জনকেই গ্রেফতার করে। ওই মামলাটি প্রথমে তদন্ত করে পুলিশ। ওই মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ছিলেন ফতুল্লা মডেল থানার এসআই মিজানুর রহমান।
তিনি আদালতে আসামিদের রিমান্ড চাওয়ার সময়ে উল্লেখ করেন, ‘খালাতো বোন তাসলিমা ২০১৪ সালের ১০ মে মামুনকে ডেকে নিয়ে কৌশলে অপহরণ করে বিষাক্ত শরবত পান করিয়ে নির্মমভাবে হত্যা করে লাশ শীতলক্ষ্যায় ফেলে দিয়ে গুম করেছে।’ পরে মামলাটি তদন্ত করে সিআইডি।
নারায়ণগঞ্জ সিআইডির সহকারী পুলিশ সুপার হারুন অর রশিদ ২০১৯ সালের ১৮ ডিসেম্বর মামলার চার্জশীট আদালতে দাখিল করেন। চার্জশীটে উল্লেখ করা হয়েছে, ২০১৪ সালের ১০ মে খালাতো বোন তাসলিমাকে দিয়ে কৌশলে মামুনকে বাড়ি ডেকে আনা হয়। পরবর্তীতে মামুনকে বিয়ের প্রস্তাব দেয় তাসলিমা। বিয়েতে রাজী না হওয়াতে বিবাদী ৬ জন মিলে মামুনকে কোমল পানির সঙ্গে চেতনানাশক দ্রব্য খাইয়ে অচেতন করে সিএনজি চালিতা অটো রিকশা করে অপহরণ করে অজ্ঞাতস্থানে নিয়ে যায়। তবে কোথায় কিভাবে কি অবস্থায় রাখা হয়েছে সেটা জানা যায়নি।’
মামলার বিবাদী পক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ এমদাদ হোসেন সোহেল জানান, ফতুল্লা থানায় তাদেরকে রিমান্ডে নিয়েছে। ফৌজদারী ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি নেয়ার জন্য তাদেরকে বারবার চাপ প্রয়োগ করা হয়েছে এবং মেরে রক্তাক্ত করেছে তৎকালিন কর্মকর্তা। তবুও জবানবন্দী আদায় করতে পারে নি। পরবর্তীতে তারা জেলা ও দায়রা জজ থেকে জামিন নিয়েছেন। তাসলিমা ও রফিক হাইকোর্ট থেকে জামিন নিয়েছেন।