শনিবার, ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ০৬:১৭ অপরাহ্ন
সংবাদ নারায়ণগঞ্জঃ- নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলার ফতুল্লা থানাধীন পাগলা শাহীমহল্লা কবরস্থান মসজিদের নির্মাণ প্রকল্পের কাজ না করেই কবরস্থানের নামে হলিডে মার্কেট বসিয়ে প্রতিসপ্তাহ ২০-২৫ হাজার টাকা উত্তোলনের অভিযোগ উঠেছে। এমনকি প্রকল্পের কাজ অসম্পূর্ণ রেখেই টাকা ভাগ-বাটোয়ারা করছেন সংশ্লিষ্ট নব আহবায়ক কমিটি। এই সব প্রকল্পের কাজের মান নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন অনেকে। নামে প্রকল্পের নির্মাণ কাজের কথা থাকলেও বাস্তবে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না।
এলাবাসীর অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, শাহীমহল্লা কবরস্থানের বিষয়ে অনেক দিন যাবত মানববন্ধন ও বিভিন্ন আন্দোলনের মাধ্যমে এলাকার সকলের সহযোগিতায় মসজিদের নিচতলায় মার্কেট নির্মাণ বন্ধ হলেও বন্ধ হচ্ছে না তাদের কবরস্থান নিয়ে চাঁদাবাজী। প্রতি সপ্তাহে কবরস্থানের নামে হলিডে মার্কেট বসিয়ে প্রায় ২০ থেকে ২৫ হাজার টাকা উত্তোলন করে নতুন কমিটির লোকজন। কিন্তু অবাক হওয়ার বিষয় হচ্ছে যে কবরস্থানের নামে টাকা উত্তলন করে সেই কবরস্থানে শুধু মাত্র ৫ হাজার টাকা দেওয়া হয় বলেও সুত্রে জানা যায়। তবে জনমনে প্রশ্ন বাকী টাকাগুলো কোথায় যায়।
এ বিষয়ে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ব্যক্তি বলেন, এখান থেকে যে টাকা উত্তোলন করা হয়, সেই টাকা নতুন কমিটির সবাই এবং কিছু বিশেষ পেশার ব্যক্তিদের নিয়ে ভাগ-বাটোয়ারা করে নিয়ে যাওয়া হয়। মানুষ কতটুকু নিচে নামলে কবরস্থানের টাকা ভাগ-বাটোয়ারা করে খায় তা অনেকেরই বোধগম্য হয়না। তাদের বিষয়ে কেউ কথা বলতে পারে না তারা এলাকার নেতা ফেতা এই ভয়ে কেউ কিছু বলে না।
আগের কমিটি বাদ দিয়ে গত ৬ জানুয়ারি কুতুবপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি হাজী মোঃ জসিম উদ্দিন জসিমকে আহবায়ক ও ফতুল।লা থানা আওয়ামী লীগের কৃষি বিষয়ক সম্পাদক হাজী মোঃ ইউনুছ দেওয়ানকে যুগ্ম আহবায়ক করে ২৭ সদস্য বিশিষ্ট কমিটি ঘোষনা করা হয়। সদস্যরা হচ্ছেন, হাজী মোঃ আবুল কালাম গাজী, হাজী মোঃ জালাল, হাজী আব্দুল মতিন , হাজী মোঃ আলী আকবর, মোঃ আব্দুল হক শিকদার, মোঃ আব্দুল খালেক মুন্সি,হাজী মোঃ মীর হোসেন মিরু, এডঃ মোঃ শাহীনুর রহমান, মোঃ মোজাফ্ফর হোসেন,মোঃ আলী আরশাদ মিয়া, আঃ রশিদ মোল্লা, হাজী মোঃ তারা মিয়া,মোঃ মোজাফ্ফর সিং, মোঃ নিজাম উদ্দিন মিন্টু, মোঃ জামাল উদ্দিন বাচ্চু, মোঃ দ্বিন ইসলাম, এস,এম শাহীন, হাজী মোঃ দিদার, মোঃ শাহাবুদ্দিন দেওয়ান, মোঃ হায়দার মাহাজন, মোঃ কামাল হোসেন মোল্লা, হাজী মোঃ ফকির চাঁন মৃধা, মোঃ আতিকুর ইসলাম খোকন, মোঃ আলী আজম, ইমরান হোসেন ইদরান।
আহবায়ক কমিটির মুষ্টিমেয় কিছু সদস্য’র এমন অমানবিক কর্মকান্ড দেখে ও শুনে হতবাক স্থানীয়রা। কবরস্থানের উন্নয়নের নামে হলিডে মার্কেট বসিয়ে উত্তোলনকৃত টাকাও নিজেদের ভাগ-বাটোয়ারা করে খেতে হবে। আবদুল আউয়াল ও সলিমুল্লাহ নামে দু’জন স্থানীয় বাসিন্দা জানান, আল্লাহ’র প্রতি আমাদের ভয় না থাকার ফলে এরুপ কর্ম করতে পারছে। মানুষ কতটুকু খারাপ হলে কবরস্থানের উন্নয়নের জন্য উত্তোলনকৃত টাকা ভক্ষন করতে পারে তা জানা নেই। বিশেষ পেশার ব্যক্তি সর্ম্পকে তারা বলেন,উনি মানুষের কাতারে কিনা তা আমাদের জানা নেই। তাছাড়া তিনি তো সাং—- তিনি প্রতিবাদের পরিবর্তে উল্টো অপরাধীদেরকে সঙ্গ দিয়ে বাটোয়ারা নিচ্ছে ছিঃ ছিঃ বলারও ভাষা আমাদের জানা নেই। আল্লাহ ওনাদেরকে সঠিক জ্ঞান দান করুক এটাই কামনা করি। কারন এটা ছাড়া আর কিছু বলার ভাষা আমাদের জানা নেই।
এ বিষয়ে কুতুবপুর ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতি ও পাগলা শাহীমহল্লা কবরস্থান মসজিদের নির্মাণ প্রকল্পের আহবায়ক মো.জসিম উদ্দিনের কাছে মুঠোফোনে জানতে চাইলে তিনি বলেন,আমার আগে যিনি ছিলে তিনিই এ রীতি চালু করেছেন। তাছাড়া গতকাল ফতুল্লা থানা পুলিশ এসেছিলো বিস্তারিত জেনে গেছেন। যে পোলাপাইনেরা টাকা তুলতো এবং নিজেরা খেতো ওরা বলেছে এখন থেকে টাকা যা উঠবে তা সবই উন্নয়ন তহবিলে জমা দিবে।
এবিষয়ে ইউনুস দেওয়ান এর মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান,মুলত টাকাগুলো তোলে মামুন,রনিসহ আরো ২/৩জন। প্রথমে ৩০০০ টাকা করে দিতো পরবর্তীতে বেড়ে তা ৫০০০ টাকায় েেপৗছায়। এছাড়া বিদ্যুত বিল বাবদ ২০০০ টাকা করে দিতো তারা। টাকাগুলো কুতুবপুর ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি মোজাফ্ফরের হাতে দেয় তারা। প্রতি সপ্তাহে প্রায় ২৮/৩০ হাজার টাকা উঠাতো বলে আমি অনেকের কাছে জানতে পেরেছি। বিস্তারিত জানতে প্রয়োজনে মোজাফ্ফরের কাছে জানতে পারেন।
এবিষয়ে কুতুবপুর ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি মোজাফ্ফরের মুঠোফোনে যোগাযোগ করে জানতে চাইলে তিনি বলেন,ভাই মসজিদের উন্নয়নের জন্যই টাকা তোলা হয়। তবে ২০/২২ হাজার টাকা নয় ১০/১২ হাজার টাকার মতো উঠায়। তাহলে এ পরিমান টাকা তুলে কেন ৫ হাজার টাকা দেয় এমন প্রশ্নের জবাবে মোজাফ্ফর হাসি-মুখে বলেন,ভাই বোঝেন তো পোলাপাইনগুলো টাকা তোলে কিন্তু তাদেরতো কিছু খরচ লাগে। তাই বলে মসজিদ বা কবরস্থানের উন্নয়নের টাকা খাবে এমন প্রশ্নের জবাবে বলেন,ভাই আপনি জসিম ভাইয়ের সাথে যোগাযোগ করেন।
এ বিষয়ে কুতুবপুরে ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মনিরল আলম সেন্টুর মুফোঠোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি তা রিসিভ করেননি।