মঙ্গলবার, ১০ ডিসেম্বর ২০২৪, ০২:১৬ পূর্বাহ্ন
সংবাদ নারায়ণগঞ্জঃ- ফতুল্লা থানার বিভিন্ন এলাকায় অতিমাত্রায় বৃদ্ধি পেয়েছে নানা সহিংসতার ঘটনা।চাঁদার দাবী,ইভটিজিং,মাদক ব্যবসার আধিপত্য,জমি সংক্রান্ত,কিশোর গ্যাং সহ তুচ্ছ ঘটনার সহ নানা কারনে গত এক মাসে ফতুল্লা মডেল থানায় সংঘটিত হয়েছে কম করে হলেও অর্ধশতাধিকেরও বেশী মারামারি- সহিংসতার ঘটনা।এসকল সহিংসতার ঘটনার অধিকাংশই থানায় অভিযোগ হয়েছে এমনকি কোন কোন ঘটনায় আবার থানায় মামলা রুজু হয়েছে।এই সময়ের মধ্যো একটি নারীর গলাকাটা লাশ ও উদ্ধার করে পুলিশ।
সাম্প্রতিক সময়ে ঘটে যাওয়া নানা সহিংসতা ও মারামারির ঘটনার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে গত মাসের২৭ এপ্রিলবিকেলে ফতুল্লার লামাপাড়ায় চাঁদার দাবীতে ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হামলা চালিয়ে ভাংচুর ও লুটপাট করেছে চাঁদাবাজরা।এ সময় হামলাকারীরা হামলা লোহার পাইপ দিয়ে পিটিয়ে পারভেজ ঢালি (৩০) কে রক্তাক্ত জখমসহ তার মাকে মারধর করে ১ ভরি ওজনের স্বনালংকার ও ক্যাশ বাক্স ভেঙ্গে নগদ ১ লাখ টাকা লুট করে নিয়েছে বলে ভুক্তভোগীরা জানিয়েছে।
এ ঘটনায় পূর্ব লামাপাড়াস্থ মুনতাহা স্টোরের মালিক পারভেজ ঢালি বাদী হয়ে একই এলাকার খন্দকার অনিক আহম্মেদ শাওন, রাজু আহম্মেদ রাজা,সোহাগ ও সেলিমের নাম উল্লেখ্য সহ অজ্ঞাত আরো ৫/৬ জনকে অভিযুক্ত করে রাতেই ফতুল্লা মডেল থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছে।
অপরদিকে গত ২০ এপ্রিল (মঙ্গলবার) সন্ধ্যা সাড়ে ৭ টায় দেশীয় অস্ত্র শস্ত্র নিয়ে নুরুল হকের বাসায় হামলা চালায় কিশোর গ্যাং। এসময় নুরুল হককে এলোপাথারী মারধর করে তাৎক্ষণিক ৫০ হাজার টাকা চাঁদা দাবি করে। কিন্তু তখনও টাকা দিতে অস্বীকার করলে নুরুল হকের চোঁখের সামনে তার স্ত্রীকে শ্লীলতাহানি করে। শুধু তাই নয়, নুরুল হকের বাড়ী ঘরে চালানো হয় লুটপাট। বাসা থেকে ক্যাশ টাকাসহ লুটপাট করা হয় মোবাইল ও স্বর্ণালংকারও।
২৩ এপ্রিল সকালে সদর উপজেলার ফতুল্লা থানার বক্তাবলীতে জমি সংক্রান্ত বিরোধের জের ধরে মমিনুল হক (২৯) নামক এক যুবককে কুপিয়ে জখম করেছে প্রতিপক্ষের লোকজন। এ ঘটনায় আহত যুবকের মা সুফিয়া বেগম বাদী হয়ে বক্তাবলীর মধ্যনগর গ্রামের আমির হোসেন, অপু, মাহাবুব খন্দকার,এনামুল,
নাজমুল, রাজামিয়া, রাজিব,ফুলমালা,রাসেল খন্দকার ও আরাফাত আলী সহ অজ্ঞাত নামা আরো ৩/৪ জনকে আসামী করে ফতুল্লা মডেল থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছে।পরে এটি মামলা হিসেবে গ্রহন করে পুলিশ।
১৪এপ্রিলসন্ধ্যায় ফতুল্লার পাগলা পশ্চিম নয়ামাটি এলাকায় মাদক ব্যবসায়ী শরীফ ও তার সহোযোগিরা হামলা চালিয়ে পিটিয়ে আহত করে যুবলীগ নেতা বিল্লাল হোসেন খান(৩৫) কে। এ ঘটনায় হামলার শিকার যুবলীগ নেতা বিল্লাল বাদী হয়ে বুধবার রাতে ফতুল্লা মডেল থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছে।
২৬ এপ্রিল বেলা ১১ টার দিকে রঘুনাথপুরস্থ ইনসেন্টিভ নামীয় গার্মেন্টস হইতে ঝুট নামানোর সময় বেলায়েত,রুহুল আমিন,জনি ও সাব্বীরসহ ত অজ্ঞাতনামা ৪/৫ জন সন্ত্রাসী দেশীয় অস্ত্র-সস্ত্রে সজ্জিত হয়ে ফকরুল ইসলামের উপর হামলা চালায়ি তাকে রক্তাক্ত জখম করে.পূর্ব শত্রুতার জের ধরে ফতুল্লার পাগলায় জেলা ছাত্রলীগের ছাত্র বৃত্তি বিষয়ক সম্পাদক ও তার এক সহোযোগিকে পিটিয়ে রক্তাক্ত জখম করে।
২৫ এপ্রিল রাতে ফতুল্লা মডেল থানার পাগলা শাহী বাজার নুরবাগ এলাকায় জেলা ছাত্রলীগ নেতা জয় হাওলাদার ও তার এক সহোযোগিকে তুলে নিয়ে মারধর করে প্রতিপক্ষের সন্ত্রাসীরা।এ ঘটনায় হামলার শিকার আহত জেলা ছাত্রলীগের ছাত্র বৃত্তি বিষয়ক সম্পাদক মোঃ জয় হাওলাদার বাদী হয়ে ৫ জনের নাম উল্লেখ্য সহ অজ্ঞাত আরো ৮/১০ জনকে আসামী করে ফতুল্লা থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করে।
৫এপ্রিল সদর উপজেলার ফতুলা থানার মাসদাইর ভাড়ৈভোগ ফারিয়া গার্মেন্টসের সামনের একটি ডোবা থেকে মাথাটি উদ্ধার করে ফতুল্লা মডেল থানা পুলিশ।প্রাথমিক ভাবে পুলিশের ধারনা ১০/১২ দিন পূর্বে হত্যা করে মাথা ফেলে রেখে যায়।
এছাড়া ফতুল্লার সস্তাপুরে কিশোর গ্যাং সদস্যরা দুটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হামলা চালিয়ে ব্যাপক ভাংচুর,লুটতরাজ চালায়।লামাপাড়া এলাকায় কিশোর গ্যাং সদস্যরা অপর একটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হামলা চালিয়ে ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠান ভাংচুর, লুটতরাজ সহ মা,ছেলেকে পিটিয়ে রক্তাক্ত জখম করে।ফতুল্লার রেল লাইন বটতলা এলাকায় ইভটিজিংয়ের প্রতিবাদ করায় ৪৮ ঘন্টার ব্যবধানে কিশোর গ্যাং দূর্জয় বাহিনী বেশ কয়েকটি দোকান ভাংচুর সহ পারভেজ নামক এক কিশোরকে ছুরিকাঘাত করে রক্তাক্ত জখম করে।
রমজানের প্রথম দিনে মাদক সেবনে বাধা দেওয়ায় কিশোর গ্যাং সদস্যরা মোক্তার হোসেন নামক এক যুবক কে ধারালো অস্ত্র নিয়ে মারতে গেলে এলাকাবাসী দলবদ্ধ হয়ে তাদের কে দেশীয় অস্ত্র সহ আটক করে গনপিটুনী সহ ৯৯৯ ‘ র মাধ্যমে পুলিশ কে সংবাদ দেয়।পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে দেশীয় তৈরী একাধিক ধারালো অস্ত্র উদ্ধার করতে সক্ষম হয়। পুলিশ এসকল ঘটনার অধিকাংশ ক্ষেত্র মামলা গ্রহন করে অভিযুক্তদের গ্রেফতার করে আদালতে পাঠালেও কোন ভাবেই কমছেনা সহিংসতার ঘটনা।আবার কোন কোন ক্ষেত্রে অভিযোগের প্রেক্ষিতে মামলা গ্রহন না করে সামাজিক ভাবে বা থানা কম্পাউন্ডে বসেই তদন্তকারী কর্মকর্তারা বিচার- শালিসির মাধ্যমে মিমাংসা করে দিচ্ছেন।