মঙ্গলবার, ১০ ডিসেম্বর ২০২৪, ১২:০৫ অপরাহ্ন
সংবাদ নারায়ণগঞ্জ:- ফতুল্লার কুতুবপুরে পূর্ব শত্রুতার জেরে দুই যুবককে কুপিয়ে হত্যার চেষ্টায় নামধারী যুবলীগ নেতা ও মাদক ব্যবসায়ী সাদ্দাম হোসেন তুহিন গংদের বিরুদ্ধে থানায় পৃথক দুই অভিযোগ। কিন্তু সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায় সম্পূর্ন উল্টো চিত্র। গত সোমবার (১৪ জুন) বিকাল ৩ টায় পাগলা নয়ামাটি ভাবির বাজার এলাকায় এ ঘটনাটি ঘটে।
বুধবার ( ১৬ জুন ) সেই ঘটনার বিস্তারিত জানতে গিয়ে গনমাধ্যমকর্মীরা জানতে পারে মুলত একটি সিমেন্টের দোকানকে ঘিরেই এ মারামারি। এদিকে এ ঘটনায় সাদ্দাম হোসেন তুহিন,ইসমাঈল হোসেন পারভেজ ও মো.জুয়েল শেখের উপর আঙ্গুল তুলে হামলায় আহত দূর্জয় ও তানভীরের পরিবারের সদস্যরা জানান, মেডিকেল গলিতে জুয়েল শেখের একটি ইট,বালু ও সিমেন্টের দোকান রয়েছে। বর্তমানে সেখানে স্বাধীন নামে এক যুবক উক্তস্থানে আরেকটি একই ব্যবসা খুলে বসেন। যা নিয়ে জুয়েল শেখ একটু চিন্তিত হয়ে পড়ে। এদেরকে কাবু করতে সাদ্দাম হোসেন তুহিন, পারভেজ এবং জুয়েল শেখের বাহিনীর সদস্যরা সেই ঘটনায় গুরুতর আহত দূর্জয় ও তানভীরকে বাসা থেকে নিয়ে কথা বলা অবস্থায় পিছন থেকেই ওদের উপর দেশীয় অস্ত্র নিয়ে হামলা চালায় তুহিন,পারভেজ ও জুয়েল বাহিনীর সদস্যরা। আহতদের পরিবারের সদস্যরা আরো জানায়, দূর্জয় ও তানভীরকে হত্যার জন্য জুয়েল সে সকল সন্ত্রাসীদের ৫০ হাজার টাকার বিনিময়ে চুক্তিবদ্ধ করেন।
এদিকে সাদ্দাম হোসেন তুহিন, পারভেজ এবং জুয়েল শেখ বাহিনীর হামলায় গুরুতর আহত হয়ে যখন দূর্জয় ও তানভীর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন সেই সময়ে নিজেদেরকে বাচাঁতে সুচতুর সাদ্দাম হোসেন তুহিন, পারভেজ এবং জুয়েল শেখের অনুগত হামলায় সরাসরি অংশ নেয়া সালামের পিতা মো.কামাল এবং পারভেজের পিতা ইব্রাহিম ফতুল্লা মডেল থানায় দুটি অভিযোগ করেন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন দূর্জয় ও তানভীরসহ অনেকের নামে। উভয়ের পরিবারের দাবী মুল ঘটনাকে ভিন্নখাতে প্রবাহিত করতে ছিনতাইয়ের ঘটনার নাটক মঞ্চস্থ করতে উঠেপড়ে নেমেছে সাদ্দাম হোসেন তুহিন, পারভেজ এবং জুয়েল শেখগং। আমরা সাংবাদিক বলবো আপনারা প্রকৃত ঘটনা নিয়ে লিখুন এবং আইন-শৃংখলা বাহিনীর প্রতি অনুরোধ করতে প্রকৃত ঘটনা জেনে অপরাধীদেরকে আইনের আওতায় নিয়ে শাস্তি প্রদান করুক।
তাদের মধ্যে সালামের পিতা কামাল অভিযোগ করেন তার দোকান ভাংচুর করা হয়েছে আর ইব্রাহিম করেছেন বাড়ি ভাংচুর। কিন্তু সরেজমিনে গনমাধ্যম কর্মীরা তার কোন সত্যতা পায়নি। ঘটনার পর থেকে সালামের কামালসহ তার পরিবারের সদস্যরা অন্যত্র পালিয়ে গেছেন। সে বাড়ির ভাড়াটিয়ারা জানান,ঘটনার পর থেকে সালামরা কেউ এখানে আসেনি। আর ইব্রাহিমের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায় তার বাড়ির দেয়াল বা গেইটে হামলার কোন চিহৃ নেই। তার মেয়ে দরজা খুললে গনমাধ্যম কর্মীরা বাড়িতে হামলা সর্ম্পকে জানতে চাইলে প্রথমে হতভম্ব হয়ে পড়েন ইব্রাহিমের মেয়ে। পরবর্তীতে অবশ্য বলেন,বাড়ির ভেতরে হামলা হয়েছে।
এ ঘটনায় দূর্জয় ও তানভীরের পরিবারের পক্ষে পাগলা দক্ষিণ নয়ামাটি, নাক্কাটার বাড়ী এলাকার মৃত আব্দুর রাজ্জাকের ছেলে মোঃ সাদ্দাম হোসেন ও একই এলাকার মোঃ আবু জাফরের ছেলে আফজাল বাদী হয়ে নয়ামাটি এলাকার সালাউদ্দিনের ছেলে সাদ্দাম হোসেন তুহিন, ইব্রাহিমের ছেলে ইসমাইল আহাম্মেদ পারভেজ, কামালের ছেলে সালাম, জামালের ছেলে মুন্না, ইদ্রিসের ছেলে জুয়েল শেখ, আনিছ রাজমিস্ত্রীর ছেলে বরিশাইল্লা সাইফুল, রাতুল ও আরিফসহ অজ্ঞাতনামা আরো ৪/৫ জনকে আসামি করে ফতুল্লা মডেল থানায় দুইটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, পূর্ব শত্রুতার জের ধরে বিভিন্ন সময় আহত তানভীর (২২) ও দূর্জয় (২০)কে প্রাণনাশের হুমকি দিয়ে আসছিলেন উল্লেখিত বিবাদীরা। এরই ধারাবাহিকতায় সোমবার বিকালে তাদের বাসা থেকে পপুলার স্কুল সংলগ্ন ডেকে নিয়ে যায়। পরে সেখানে সামান্য বিষয় নিয়ে আহত তানভীর ও দূর্জয়য়ের সাথে অযথা ঝগড়া বিবাদ সৃষ্টি করে উল্লেখিত সন্ত্রাসীরা। একসময় পূর্ব পরিকল্পিতভাবে বিবাদীগণের সাথে থাকা দেশীয় অস্ত্র চাপাতি, রাম দা, সুইচ গিয়ার, লোহার পাইপ ধারা তানভীর ও দূর্জয়কে এলোপাথাড়ি হত্যার উদ্দেশ্যে কুপিয়ে রক্তাক্ত জখম করে। পরবর্তীতে লোক মারফত খবর পেয়ে আহতদের পরিবারের লোকজন এসে তাদের উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। বর্তমানে তানভীর ও দূর্জয় চিকিৎসাধীন অবস্থায় আছেন বলেও অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত সাদ্দাম হোসেন তুহিনের মুঠোফোনে জানতে চাইলে তিনি বলেন,আমি শুনেছি এখানে দুইগ্রুপে ঝগড়া হয়েছে। কিন্তু সেখানে আমাকে অভিযুক্ত করেছে কেন তা জানিনা। অথচ আমি উক্তস্থানে ছিলাম না। আমি রাজনীতি করি বলেই হয়তবা আমার নামটি অর্ন্তভুক্ত করেছে। তবে ভাই আমি ষড়যন্ত্রের শিকার হয়েছি।
অপর অভিযুক্ত জুয়েল শেখের মুঠোফোনে জানতে চাইলে তিনি বলেন,আমার নাম এখানে আসবে কেন? আমিতো আমাদের চেয়ারম্যানের সাথে সেখানে একটি বিচারে গিয়েছিলাম। তাছাড়া যাদেরকে মারধর করা হয়েছে ওরা চিহিৃত অপরাধী।