মঙ্গলবার, ১০ ডিসেম্বর ২০২৪, ১১:০২ পূর্বাহ্ন
সংবাদ নারায়ণগঞ্জ:- নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলার পাগলা নয় মাটি মুসলিম পাড়া এলাকায় অবস্থিত লাবনী ফুড বেভারেজ লিমিটেড নামক একটি কারখানা। বাহির থেকে তালাবদ্ধ থাকে সব সময়। দেখে যে কেউ বলবে কারখানাটি অনেকদিন ধরে বন্ধ। কিন্তু তা নয় প্রশাসনের চোখ ফাঁকি দিতেই এমন পন্থা অবলম্বন করছেন ওই কারখানাটির মালিক মোঃ উজ্জল। ভেতরে ঢুকতেই দেখা যায় কাজ করছে প্রায় অর্ধ- শতাধিক শ্রমিক। তৈরী করছে ফ্রুটিলা আমের জুস, ললিপপ সহ তরল শ্রেনীর শিশু খাদ্য। অথচ প্রতিটি খাদ্যের মোড়কে আমের ছবি থাকলেও কারখানার ভিতরটির কোথাও মিলেনি এক টুকরো আম।
সম্পূর্ণ কেমিক্যাল দিয়ে ম্যাংগো ফ্রুটিলা তৈরি করছে এই কারখানাটি। লাবনী ফুড বেভারেজ লিমিটেড নামক এই কারখানা ব্যাপক অনিয়মের মধ্য দিয়ে শিশু খাদ্য তৈরি হচ্ছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
সরজমিনে সাংবাদিকরা গেলে প্রথমেই খটকা লাগে সাংবাদিকদের। প্রধান গেইটে তালাবদ্ধ দেখতে পায়। তবে কারখানার ভিতরে শ্রমিকরা কাজ করছে নিশ্চিত হয়ে তারা গেট খোলার জন্য অনুরোধ করে। তবে গেট খুলতে তাদের আধা ঘন্টার মত সময় নেয়। এমনকি সাংবাদিকদের উপস্থিতিতে কর্মরত শ্রমিকদের ছুটি দিয়ে দেওয়া হয়।
কারখানার ভিতরে প্রবেশ করলে দেখা যায়, শ্রমিকদের কাজের স্থান ও গুদাম একই ভবনে রাখা। সেখানে কার্টনে ভরা ‘আমের জুস ও আইস ললি’। এগুলো শিশুখাদ্য হিসেবে বাজারে বিক্রি হয়ে আসছে। কিন্তু শিশুদের এই খাদ্যের পুরোটাই বিষে ভরা। রাসায়নিক রং, আমের রাসায়নিক ফ্লেভার ও স্যাকারিন দিয়ে তৈরি হয় কথিত এই আমের জুস। আইস ললিও তৈরি হচ্ছে রাসায়নিকে। তবে এই কারখানার আরো একটি গোডাউন রয়েছে পাগলা দেলাপাড়া এলাকাতে।
প্যাকেট করা আমের লোগোযুক্ত বোতলজাত জুস,ললিপপ সহ নানা শ্রেনীর শিশু খাদ্য। যেহেতু ম্যাংগো ফ্রুটিলা কারখানাটির প্রথম তলা থেকে তৃতীয় তলা পর্যন্ত খুঁজেও একটি আমের সিলকা পাওয়া গেল না। কিন্তু জুসের গায়ে স্টিকার লাগানো বিশাল বড় বড় আমের ছবি দেওয়া আছে। তাহলে সেই আম কি বোতল খেয়ে নিয়েছে।
বিএসটিআইয়ের অনুমোদন রয়েছে কিনা এ বিষয়ে জানতে চাইলে উপস্থিত এক কর্মকর্তা হ্যা সূচক উত্তর দিলেও তা দেখাতে পারেন নি।
অপরদিকে একটি কক্ষ তালাবদ্ধ দেখে ভিতরে কি রয়েছে জানতে চাইলে ঐ কর্মকর্তা জানান,তালাবদ্ধ ঘরটির চাবি তার নিকট নেই। সেটি তার মালিকের নিকট রয়েছে। কারখনাটি তৃতীয় তলা হলেও প্রথম তলা থেকে তৃতীয় তলা পর্যন্ত কোথাও দেখা মেলেনি অগ্নি নির্বাপাক যন্ত্রের।
স্থানীয়দের সাথে আলাপ করে জানায়, ইতিপূর্বে কারখানায় একাধিকবার আইন- শ্ংখলা রক্ষাকারী বাহিনী অভিযান চালিয়ে বেশ কয়েকজন কে আটক সহ আর্থিক দন্ড করেছিলো এমনকি তালাবদ্ধ ও করে দিয়েছিলো।
পরবর্তীতে স্থানীয় প্রশাসন,সরকার দলীয় হোমড়াচোমরাদের ম্যানেজ করে কারখানাটি আবারো চালু করে। তারা জানান কারখানায় আমের জুস তৈরি হলেও আম নিয়ে আসতে দেখা যায়নি তবে ক্যামিকেলের বড় বড় ড্রাম ডুকতে দেখে প্রায় সময়।
এ বিষয়ে মুঠোফোনে কথা হয় কারখানাটির মালিক উজ্জলের সাথে তিনি কারখানার বিরুদ্ধে আনিত সকল অভিযোগ অস্বীকার করে বলে আম দিয়েই সকল খাবার তৈরি করা হচ্ছে। প্রথমে আইন- শৃংখলা বাহিনীর অভিযানের বিষয়টি অস্বীকার করলেও এক পর্যায়ে স্বীকার বাধ্য হয় যে কাগজ- পত্রের ত্রুটির কারনে একবার চারজনকে আটক করে নিয়ে গিয়েছিলো সে সময় তিনদিন বন্ধ ছিলো কারখানাটি। এখন কাগজ পত্র সব কিছু ঠিক আছে বলে জানান তিনি।
তাই বিষয়টি এলাকাবাসী খাদ্য দ্রব্য নিয়ন্ত্রন অধিদপ্তর ও বিএসটিআইয়ের অভিযান পরিচালনা করার জন্য অনুরোধ করেছে।