মঙ্গলবার, ০৫ নভেম্বর ২০২৪, ১০:২৮ পূর্বাহ্ন
সংবাদ নারায়ণগঞ্জ:- আবারো বেপরোয়া হয়ে উঠেছে কুতুবপুরে কিশোর গ্যাং। রাজনৈতিক নেতারা মাদক ব্যবসা-চাঁদাবাজিসহ এলাকার নিয়ন্ত্রণে ব্যবহার করা হচ্ছে তাদের। আর দলীয় প্রভাবের কারণে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীও কার্যকর কোনো ব্যবস্থা নিতে পারছে না।
কায়েম করছে একের পর এক কিশোর গ্যাংয়ের ত্রাসের রাজত্ব। কোথাও প্রকাশ্যে হত্যা করছে, কোথাও প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করতে অংশ নিচ্ছে হানাহানিতে। আবার কোথাও টার্গেট কিলিংয়ে ব্যবহার হচ্ছে তারা। কুতুবপুরে এ ধরনের ১০ থেকে ১৫টি কিশোর গ্যাং গ্রুপের আধিপত্য রয়েছে। এদর নিয়ন্ত্রননে রয়েছে ক্ষমতামীন দলের নাম ব্যবহার করা কিছু ছিটকে নেতা।
সম্প্রতি পাগলা নয়ামাটি এলাকায় মাসুদ নামের এক যুবককে হত্যার ঘটনায় অংশ নেয়া বেশির ভাগ হামলাকারীই ছিল কিশোর গ্যাংয়ের সদস্য। কিশোর গ্যাংয়ের ছুরিকাঘাতের পুরো দৃশ্য ধরা পড়ে সিসি টিভির ক্যামেরায়। এমনকি ছুরিকাঘাতে হত্যার ঘটনায় নায়ক আটক কিশোর গ্যাং লিডার সোহেল। আর এ নায়কদের শেল্টার দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে পাগলা নয়ামাটি এলাকার কথিত যুবলীগ নেতা পরিচয়দানকারী গেন্দুর নাম।
এদিকে কিশোর গ্যাংয়ের শেল্টারদাতা গেন্দুকে থানায় তলব করলে তাকে বাঁচাতে থানায় হাজির হন কুতুবপুর ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতি জসিম উদ্দিন।
এবিষয়ে জানতে কুতুবপুর ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতি জসিম উদ্দিন ফোন দিলে তিনি বলেন, ওসি সাহেব আমাদেরকে ডেকে ছিল হাটের ব্যাপারে। আমি গেন্দুর ব্যাপারে যায়নি। কিন্তু তিনি ওসি সাহেবকে এও বলেন বিষয়টি দেখতে।
এলাকাবাসীর তথ্য মতে এই এলাকার কিশোর গ্যাংদের নিয়ন্ত্রনে রয়েছে গেন্দু। এমনকি হত্যায় অংশ নেওয়া অনেককেই গেন্দু ঈদে পাঞ্জাবীও দিয়েছে। হত্যাকারী সোহেল গেন্দুর ছোট ভাই পরিচয়ে কিশোর গ্যাংয়ের আরেক লিডার রাকিবের মাধ্যমেই এই নয়ামাটি এলকায় আবির্ভাব হয় তার। তার পরেই চলে আসে গেন্দুর নিয়ন্ত্রণে। গেন্দুর নিয়ন্ত্রনে আসার পর থেকেই আরো বেপরোয়া হয়ে উঠে এই কিশোর গ্যাং গ্রুপ। এর পরেই শুরু হয় তাদের মাদক ব্যবসা, চাঁদাবাজী, ছিনতাইসহ বিভিন্ন অপকর্ম।
এলাকাবাসী জানায়, গেন্দু ডিস ও ইন্টারনেট ব্যবসা পরিচালনা করে। এটিকে ব্যবহার করে গড়ে তোলে কিশোর গ্যাং গ্রুপ। তাদেরকে ব্যবহার করে বিভিন্ন কাজে। এসব কিশোর অপরাধী চক্র বা গ্যাংয়ের পেছন থেকে মদদ দিচ্ছেন ক্ষমতাসীন দলের কিছু উচ্চাভিলাষী নেতা। যারা তাদের ব্যবহার করে ফায়দা লুটতে ব্যস্ত। বিশেষ করে সমাজে ‘বড় ভাই’ পরিচিতি পেতে এসব কিশোর বা উঠতি বয়সী তরুণকে নানা অনৈতিক কাজে ব্যবহার করছেন তারা। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অভিযানে প্রায়ই বিভিন্ন গ্রুপের সদস্যরা গ্রেফতার হলেও পেছনে থেকে পৃষ্ঠপোষকতা ও আস্কারা দেয়া ‘বড় ভাইরা’ থেকে যাচ্ছেন অধরা।
এসব কিশোর গ্যাংকে পেছন থেকে সমর্থন দেয় ক্ষমতাসীন দলের স্থানীয় নেতাদের একাংশ। তারা ‘বড় ভাই’ হিসেবে এই কিশোরদের কাজে প্রভাব বিস্তার করে থাকেন।
অধিকাংশ ক্ষেত্রে সরকারি দলের মাঠপর্যায়ের কতিপয় রাজনৈতিক নেতা পরিচয়দানকারীরা কিশোর গ্যাংগুলোকে পৃষ্ঠপোষকতা দিচ্ছেন। উগ্র কিশোরদের ব্যবহার করে চাঁদাবাজি ও এলাকার নিয়ন্ত্রণ বজায় রাখাসহ নিজেদের স্বার্থসিদ্ধি করছেন ওই ‘বড় ভাইরা’। ছোট খাটো সমস্যায় পড়লে তা তারা সামাল দেন। আবার তাদেরকে আরেক বড় ভাই শেল্টার দিচ্ছে।
তাদের আস্কারায় কিশোর গ্যাং লিডার সোহেলের হাতে দিনদুপুরে পাগলা নয়ামাটি এলাকায় কুপিয়ে হত্যা করে মাসুদ নামের এক যুবককে।