মঙ্গলবার, ১০ ডিসেম্বর ২০২৪, ১১:৫৮ পূর্বাহ্ন
সংবাদ নারায়ণগঞ্জ:- দীর্ঘদিন দলের নেতৃত্বে থাকা বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া তার রাজনৈতিক জীবনের প্রায় শেষ দিকে এসে দলের কাউকেই আর বিশ্বাস করতে পারছেন না।
বিশ্বস্ত সূত্রে জানা গেছে, দল কিংবা নিজের রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ এবং চলমান মামলা- কোনো ব্যাপারেই কারো ওপর তার আস্থা নেই।
খালেদা জিয়ার জামিন পাওয়ার পর তার অবস্থান দেখে এরই প্রতিফলন পাওয়া গেছে। তার ঘনিষ্ঠজনরা বলছেন, খালেদা জিয়ার মুক্তির মেয়াদ বৃদ্ধিতে সরকারের ইতিবাচক মনোভাবের ওপরই নির্ভরশীল হয়ে উঠেছে তার পরিবারের সদস্যরা।
তারা মনে করছেন, বিএনপির পক্ষ থেকে খালেদা জিয়ার মুক্তির আন্দোলনের ঘোষণা দেওয়া হলেও বাস্তবে তারা কোনো আন্দোলন গড়ে তুলতে পারেনি। আইনি পথে খালেদা জিয়ার মুক্তির চেষ্টা করা হলেও সফল হয়নি তার আইনজীবীরা।
তাই এ বিষয়ে আর দলীয় নেতা-কর্মীদের সম্পৃক্ত করতে চান না খালেদার পরিবারের সদস্যরা। জামিনের মেয়াদ বৃদ্ধির জন্য তাই নিজেরাই সরকারের কাছে দৌড়ঝাঁপ শুরু করেছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, দলীয় কর্মসূচি ও আইনজীবীদের তোড়জোড়ের প্রতি সম্পূর্ণ বিশ্বাস ভেঙে গেছে জিয়া পরিবারের। তাই খালেদার মুক্তির একমাত্র পথ সরকারের সদিচ্ছাকে মনে করছে তারা। তাই দলের সিদ্ধান্তকে উপেক্ষা করেই সরকারের শরণাপন্ন হয়েছে খালেদার পরিবার।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক দলের সিনিয়র ও দায়িত্বশীল এক নেতা বলেন, খালেদা জিয়া জেলে থাকলে বিএনপির ভোট বাড়বে- এমন ধারণা ছিল বিএনপি নেতাদের। রাজনৈতিক কৌশল হিসেবে নিজ দলই খালেদা জিয়াকে ব্যবহার করতে চেয়েছিল। কিন্তু তা সফল হয়নি। খালেদা জিয়ার পরিবারের সদস্যরা এখন বিএনপি নেতাদের কথা বিশ্বাস করে না।
প্রসঙ্গত, এর আগে ২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় কারাগারে যান খালেদা জিয়া। জিয়া অরফানেজ এবং জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় ১৭ বছরের কারাদণ্ড হয় তার। দলীয় কর্মসূচি ও আইনজীবীদের দৌড়ঝাঁপে ব্যর্থ হয়ে পরিবারের সদস্যরা যোগাযোগ করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে। দীর্ঘ ২৫ মাস পর প্রধানমন্ত্রীর কৃপায় নির্বাহী আদেশে শর্ত সাপেক্ষে মুক্তি পায় খালেদা। বর্তমানে তিনি আরাম-আয়েশে তার গুলশানের ভাড়া বাসায় আছেন। যেহেতু তার জামিনের মেয়াদ শেষ, এমন অবস্থায় জামিনের মেয়াদ বাড়তে আবারো সরকারের শরণাপন্ন হয়েছেন তার পরিবারের সদস্যরা।