বুধবার, ৩০ এপ্রিল ২০২৫, ০৮:৫৭ পূর্বাহ্ন

ফতুল্লায় সুদের টাকা দিতে না পারায় নবজাতক শিশুকে নিয়ে বিক্রি

সংবাদ নারায়ণগঞ্জ:- এক বছর পূর্বে সুদের টাকা পরিশোধে নবজাতক শিশুকে বিক্রি করা সেই শিশুকে উদ্ধার করেছে ফতুল্লা মডেল থানা পুলিশ।

শনিবার(১৬ এপ্রিল) রাতে মুন্সিগঞ্জ জেলার শ্রীনগর থানা এলাকার দক্ষিণ পাশা থেকে উদ্ধার করা হয়। এ সময় আটক করা হয় শিশুটিকে কিনে নেয়া রানু(৪০) নামক এক নারীকে।

আটককৃত রানু বেগম মুন্সিগঞ্জ জেলার শ্রীনগর থানার দক্ষিন পাশার মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর মিয়ার স্ত্রী।

বিষয়টি নিশ্চিত করে ফতুল্লা মডেল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) তরিকুল ইসলাম জানান, অভিযোগ পেয়ে তদন্ত নেমে নিজস্ব সোর্স ও তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে শনিবার রাত সাড়ে ১১ টার দিকে মুন্সিগঞ্জ জেলার শ্রীনগর থানার দক্ষিণ পাশা গ্রামে অভিযান চালিয়ে বাচ্চাটি কে উদ্ধার সহ আটক করা হয়েছে রানু বেগম কে। এ বিষয়ে মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে বলে তিনি জানান।তবে মূল হোতা লাকীকে এখনো গ্রেফতার করা সম্ভব হয়নি বলে তিনি জানান।

বাচ্চা ক্রয় কারী আটককৃত রানু বেগম জানায়,তার একটি ছেলে ও মেয়ে রয়েছে।কিন্ত ছেলেটি প্রতিবন্ধী। তাই সে একটি ছেলে দত্তক বা ক্রয় করার জন্য পরিচিতজনদের বলে রেখেছিলো। এক বছর একমাস পূর্বে শ্যামপুর আফসার করিম রোডের মৃত আয়াত আলীর স্ত্রী সুমা তাকে ফোন করে জানায় একটি বাচ্চা বিক্রি হবে।সে তখন ৬০ হাজার টাকা দিয়ে বাচ্চাটি ক্রয় করে। বাচ্চাটির নাম রেখেছেন ইউসুফ।

সুমা জানায়,তার বোন ঝর্নার মাধ্যমে জানতে পারে যে একটি বাচ্চা বিক্রি হবে।পরে সে তার মামী রানু বেগম কে জানালে সে আগ্রহ প্রকাশ করে ৬০ হাজার টাকা দিয়ে বাচ্চাটি কিনে নেয় অপরদিকে ঝর্না জানায়, আলীগঞ্জস্থ বিডব্লিউটি কলোনীর শাহালমের ভাড়াটিয়া ফারুকের স্ত্রী রুবিনা তাকে ফোন করে জানায় বাচ্চা বিক্রির কথা।

রুবিনা জানায়, লাকী বেগম তাকে বাচ্চা বিক্রির কথা জানায়।পরে ৬০ হাজার টাকার বিনিময়ে বাচ্চাটি কিনে নেয় রানু বেগম। লাকী টাকা নেয় এবং বাচ্চাটিকে তার মা নিজেই রানু বেগমের হাতে তুলে দেয়।

 

বাচ্চাটির মা রানী বেগম পিরোজপুর জেলার মঠবাড়িয়া থানার বাদারতলীর হান্নান চৌকিদারের স্ত্রী। তারা স্ব- পরিবারে বর্তমানে ফতুল্লা থানার আলীগঞ্জ বিডব্লিউটিএর কলোনীতে বসবাস করে আসছে।

তিনি জানায়, দুই বছর পূর্বে অভিযুক্ত লাকী বেগমের নিকট থেকে সে পাঁচ হাজার টাকা ঋন গ্রহন করে। গত ২ বছরে ঐ টাকার বিপরীতে লাকী বেগম কে ২ লাখ ১০ হাজার টাকা প্রদান করে। এমনকি এক বছর পূর্বে সুদের টাকা পরিশোধে তার নবজাতক সন্তান কে বিক্রি করে দিয়েও সম্পূর্ন টাকা আত্মসাৎ করে লাকী বেগম।

পরবর্তীতে আবার বৃহস্পতিবার (১৪ এপ্রিল) পুনরায় লাকী বেগম বাদীর বাড়ীতে এসে আসল এবং সুদ সহ ১ লাখ ৩ হাজার টাকা দাবী করে অন্যথায় তাকে মারধর করা হবে জানায়।

ফতুল্লা থানা পুলিশের একটি সূত্র জানায়, বাচ্চাট কেনা বাচার সাথে জড়িতের অভিযোগে,পুলিশ মূল হোতা লাকীর বাবা,মা সহ সাত জনকে আটক করেছে পুলিশ।

নিউজটি শেয়ার করুন...


© 2022 Sangbadnarayanganj.com - All rights reserved
Design & Developed by POPULAR HOST BD