বুধবার, ৩০ এপ্রিল ২০২৫, ০৯:৫৭ পূর্বাহ্ন
সংবাদ নারায়ণগঞ্জ:- ফতুল্লা থানা এলাকার আলোচিত একটি এলাকা হলো আলীগঞ্জ। আর এই আলীগঞ্জে এলাকায় প্রতিদিনই বসছে মাদকেরহাট। ফতুল্লা মডেল থানা পুলিশের ঠিকমতো কার্যক্রম না থাকায় দিন দিন বেড়েছে মাদক ব্যবসায়ীদের অভয়ারণ্য। কি কারনে থানা পুলিশ মাদক ব্যবসায়ীদের নিয়ন্ত্রণ করতে পারছে না এমনই প্রশ্ন জনমনে। তাহলে কি মাদক ব্যবসায়ীর কাছে পুরোপুরি নিরুপায় পুলিশ।
এদিকে ফতুল্লার আলীগঞ্জে হাত বাড়ালেই মিলছে গাজাঁ, হেরোইন, ইয়াবা ট্যাবলেট, ফেনসিডিলসহ সকল প্রকার মাদক। আলীগঞ্জের প্রধান সড়ক থেকে শুরু করে আলিগঞ্জের প্রতিটি অলি-গলি ছেয়ে গেছে মাদকে। এতে করে মাদকের নিরাপদ ও সুরক্ষিত গোডাউন হিসেবে পরিচিতি পেয়েচে আলীগঞ্জ। আর এ সকল মাদক ব্যবসার নিয়ন্ত্রণ করছে পুলিশের কথিত সোর্স আয়নাল হক অরুফে আইনু।
স্থানীয়দের তথ্য মতে, পুলিশের কথিত সোর্স আইনু, রাসেল ওরফে সল্টু রাসেল নিয়ন্ত্রণ করছে আলীগঞ্জের সিংহভাগ মাদক বাজার। আর মাদক বাজারে এই দুই প্রভাবশালী মাদক ব্যবসায়ীর রয়েছে প্রায় দুই ডজনেরও বেশী সেলসম্যান বা খুচরা বিক্রেতা। এছাড়াও বিচ্ছিন্ন ভাবে রয়েছে প্রায় শতাধিক খুচরা মাদক বিক্রেতা। প্রতিটি মাদক স্পট থেকে মাসোহারা নিচ্ছে পুলিশ।
তথ্য মতে, বেশ কয়েক বছর পূর্বে ফেনসিডিলসহ তৎকালীন ফতুল্লা মডেল থানার এএসআই কামরুল হাসান মাদক ব্যবসায়ী আইনুল হক অরূপে আইনুকে গ্রেপ্তার করে। কিছুদিন পর জেল থেকে বেরিয়ে এসে হয়ে যায় ওই দারোগার সোর্স। এরপরে শুরু করে পুনরায় মাদক ব্যবসা। পুলিশের সোর্স হওয়ার কারণে অনেকে ভয়ে তার বিরুদ্ধে কোন কথা বলে না। কিছু বললেই দেখায় পুলিশের ভয়। দিন দিন গড়ে তুলেছে মাদকের বিশাল সিন্ডিকেট। শুধু তাই নয় মাদক বিক্রি করে তৈরি করেছে দুটি বাড়ি, কিন্তু এত কিছুর পরেও পুলিশের ধরাছোঁয়ার বাহিরে এই কথিত সোর্স আইনু। বর্তমানে পুরো আলীগঞ্জ তার মাদকের আওতায়। এখন আলীগঞ্জে এর মাদকের সবচেয়ে বড় ডিলার। বসে থেকে পরিচালনা করছে মাদকের বিশাল বাজার।
অপরদিকে, সল্টু রাসেল, মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের হাতে হেরোইনসহ গ্রেপ্তার হয়েছিল সল্টু রাসেলের স্ত্রী কবিতা। জামিনে বেরিয়ে এসে আবারও সল্টু রাসেলের সাথে মাদক বিক্রি শুরু করে কবিতা। বর্তমানে মাদক বিক্রির কৌশল পাল্টেছে এই মাদক ব্যাবসায়ী সল্টু রাসেল। মাদকের টাকায় বাড়ি কিনে ইতোমধ্যে সফল মাদক ব্যাবসায়ী হিসেবে পরিচিতি লাভ করেছে সে। সেই সাথে মাদক বিক্রির স্থানও পরিবর্তন করেছে। সরকারদলীয় স্থানীয় একটি প্রভাবশালী মহলকে ম্যানেজ করে করে অতিতের মতো নির্বিঘ্নে চালিয়ে যাচ্ছে মাদক ব্যবসা।
সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত আইনু ও সন্টু রাসেলের প্রায় ডজন খানেক সেলসম্যান মোবাইল ফোনের মাধ্যমে মসজিদ গলি থেকে রেল লাইন পর্যন্ত বিভিন্ন অলিগলিতে অবস্থান করে বিক্রি করছে নানা ধরনের মাদক।
এছাড়া আলীগঞ্জের মাদক ব্যবসায়ীদের মধ্যে অন্যতমরা হচ্ছে ডেনী, সোর্স বগি সাইদ, খুকি মেম্বারের ভাই কবির, রাশু ওরফে রাসেল, মস্তাকিন, বগি সাইদ। আলীগঞ্জ রেললাইনের পূর্ব পাশে মাদ্রাসা রোডে পোকনের ছেলে জসিম, আলীগঞ্জ রেললাইন মসজিদের পাশে আফসার ড্রইভারের ছেলে ইকবাল ড্রাইভার, আলীগঞ্জ তিন রাস্তার মোড় এলাকার ওয়াসিম, একই এলাকার বারেক এর ছেলে ড্রইভার জুয়েল ও তার ছোট ভাই আহাম্মদ। আলীগঞ্জ তিন রাস্তার মোড়ের আহাম্মদ, আরমান।
এলাকাবাসীর অভিযোগ, সরকার দলীয় স্থানীয় রাজনৈতিক নেতা এবং প্রশাসনের অসাধু কর্মকর্তারা এই সকল মাদক ব্যবসায়ীদের নিকট থেকে অবৈধ সুবিধা নিয়ে তাদেরকে নির্বিঘ্নে মাদক ব্যবসা করার সুযোগ করে দিচ্ছে। মাদকের সুরক্ষিত গোডাউন বলে পরিচিত আলীগঞ্জ এলাকার মাদক ব্যবসায়ীদের গ্রেফতারে জেলা পুলিশ সুপারের হস্তক্ষেপ কামনা করেছে তারা।