শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ০৩:২১ পূর্বাহ্ন

বিশ্ব চ্যাম্পিয়নদের নাস্তানাবুদ করে বাংলাদেশের সিরিজ জয়

সংবাদ নারায়ণগঞ্জ:- বাংলাদেশের সামনে ছিল ইতিহাস গড়ার হাতছানি। তবে বিশ্বচ্যাম্পিয়ন ইংল্যান্ড যে ছেড়ে কথা বলবে না সেটাও জানা ছিল। মিরপুর শের-ই-বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে তাই দুই দলের জমজমাট লড়াইয়ের প্রত্যাশা ছিল। হয়েছেও এমনটাই।

তবে ক্ষণে ক্ষণে রঙ বদলানো ম্যাচে শেষ হাসি হেসেছে বাংলাদেশই। টানটান উত্তেজনাপূর্ণ লড়াইয়ে ইংলিশদের চার উইকেটে হারিয়ে স্মরণীয় জয় পেয়েছে টাইগাররা। একইসঙ্গে প্রথমবারের মতো বিশ্বচ্যাম্পিয়নদের বিপক্ষে গড়েছে সিরিজ জয়ের কীর্তি।

মিরপুর শের-ই-বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে আগে ব্যাট করে নির্ধারিত ২০ ওভারের শেষ বলে অল আউট হওয়ার আগে ১১৭ রান সংগ্রহ করেছিল ইংল্যান্ড। জবাবে ৭ উইকেট হারিয়ে জয়ের বন্দরে পৌঁছায় বাংলাদেশ। বাকি ছিল ৭ বল।

বাংলাদেশের হয়ে রান তাড়া করতে নামেন লিটন দাস ও রনি তালুকদার। দলীয় ১৬ ও ব্যক্তিগত ৯ রানে সাজঘরে ফেরেন লিটন দাস। আরেক ওপেনার রনিও এদিন ৯ রানের বেশি করতে পারেননি।

পাওয়ার প্লে-তে দুই উইকেট হারানোর পর দলের হাল ধরেন নাজমুল হোসেন শান্ত ও তৌহিদ হৃদয়। দুজনের ২৯ রানের জুটিতে ম্যাচে ফেরে বাংলাদেশ। তবে ১৭ রানে তিনি আউট হলে ফের চাপে পড়ে টাইগাররা।

মেহেদী মিরাজকে সঙ্গে নিয়ে দলকে জয়ের পথে এগিয়ে নিতে থাকেন শান্ত। দুজনের ৪১ রানের জুটিতে ম্যাচ স্বাগতিকদের হাতের মুঠোয় চলে আসে। কিন্তু ২০ রানে মিরাজ ফেরার পরই বদলে যায় দৃশ্যপট।

সাকিব ০ ও আফিফ হোসেন ২ রানে আউট হলে বাংলাদেশ শিবিরে চাপ আরো বাড়ে। শেষ ২ ওভারে টাইগারদের প্রয়োজন দাঁড়ায় ১৩ রান। ক্রিজে তখন সবার আশা-ভরসার প্রতীক হয়ে ছিলেন শান্ত।

দর্শকদের হতাশ করেননি শান্ত। ক্রিস জর্ডানের করা পেনাল্টিমেট ওভারের প্রথম তিন বলে ৭ রান নেন তিনি। পরের দুই বলে তাসকিন দুটি চার হাঁকালে উত্তেজনায় ফেটে পড়ে গ্যালারি। একইসঙ্গে নিশ্চিত হয় বাংলাদেশের সিরিজ জয়।

একপ্রান্ত আগলে রেখে ৪৬ রানে অপরাজিত থাকেন শান্ত। ইংল্যান্ডের হয়ে জোফরা আর্চার তিনটি এবং স্যাম কুরান, মঈন আলী ও রিহান আহমেদ একটি করে উইকেট শিকার করেন।

এর আগে টস জিতে ফিল্ডিং করার সিদ্ধান্ত নেন বাংলাদেশ অধিনায়ক সাকিব আল হাসান। এদিন ইংল্যান্ডের হয়ে ইনিংস উদ্বোধনে নামেন ফিল সল্ট ও ডেভিড মালান।

ব্যাটিং অর্ডারে প্রমোশন পেলেও মালানের ভাগ্যে পরিবর্তন হয়নি। তাকে থার্ড ম্যান অঞ্চলে হাসান মাহমুদের তালুবন্দী করেন তাসকিন আহমেদ। এর আগে এ ব্যাটার করেন ৫ রান।

দ্বিতীয় উইকেট জুটিতে ৩৪ রান যোগ করেন সল্ট ও মঈন আলী। এ দুজনের ব্যাটে যখন ম্যাচে প্রাধান্য বিস্তার করছে ইংল্যান্ড তখনই আক্রমণে এসে শিকারে মাতেন সাকিব। ২৫ রানে সল্টকে ফেরান টাইগার অধিনায়ক।

এদিকে আক্রমণে এসে টানা দ্বিতীয় ম্যাচে জস বাটলারকে ফেরান হাসান মাহমুদ। মঈন আলীকেও ১৫ রানের বেশি করতে দেননি মেহেদী হাসান মিরাজ। ৫৭ রানে চার উইকেট হারিয়ে ফের ব্যাকফুটে চলে যায় ইংল্যান্ড।

এ অবস্থায় হাল ধরে ধীরে ধীরে দলকে এগিয়ে নিতে থাকন বেন ডাকেট ও স্যাম কুরান। দুজনে গড়েন ৩৪ রানের জুটি। ইংলিশ শিবিরে এরপর জোড়া আঘাত হানে মিরাজ। স্যামকে ১২ রানে ফেরানোর পর ক্রিস ওকসকে রানের খাতাই খুলতে দেননি তিনি।

এখানেই থামেননি মিরাজ। নিজের শেষ ওভারে এসে ক্রিস জর্ডানকেও ফেরান তিনি। এর মাধ্যমে টি-২০তে নিজের সেরা বোলিং রেকর্ড গড়েন এ অফস্পিনার। ৪ ওভারে মাত্র ১২ রান দিয়ে ৪ উইকেট শিকার করেন মিরাজ।

ইনিংসের শেষ ওভারে আউট হওয়ার আগে দলের পক্ষে সর্বোচ্চ ২৮ রান করেন বেন ডাকেট। অভিষিক্ত রিহান আহমেদের ১১ রানের ক্যামিওতে লড়াই করার মতো পুঁজি পায় ইংলিশরা।

বাংলাদেশের হয়ে মিরাজ ৪ উইকেট নেন। এছাড়া তাসকিন আহমেদ, মুস্তাফিজুর রহমান, সাকিব আল হাসান ও হাসান মাহমুদ প্রত্যেকেই একটি করে উইকেট শিকার করেন।

নিউজটি শেয়ার করুন...


© 2022 Sangbadnarayanganj.com - All rights reserved
Design & Developed by POPULAR HOST BD