শনিবার, ০৮ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ১০:৪০ অপরাহ্ন
সংবাদ নারায়ণগঞ্জঃ- ফতুল্লায় ছোট বোনকে ধর্ষণে বাধা দেয়ায় গার্মেন্টকর্মী বড় বোনকে ছুরিকাঘাত করেছে কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যরা। গত (১১ অক্টোবর) রোববার রাতে ফতুল্লার শিহাচর শাহজাহান রোলিং মিল এলাকায় মনির হোসেনের বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে।
এ ঘটনার (১২ অক্টোবর) সোমবার কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যদের বিরুদ্ধে ফতুল্লা মডেল থানায় জিডি করায় রাতেও কয়েক দফা হামলা চালায় তারা।
এদিকে কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যদের ছুরিকাঘাতে আহত গার্মেন্টকর্মীকে (২৫) ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়া হয়েছে। তার পেটে কয়েকটি ছুরিকাঘাত করা হয়েছিল।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ফতুল্লার শিহাচর শাহজাহান রোলিং মিল এলাকায় বসবাসরত স্বামী-স্ত্রী তিন মেয়ে ও দুই ছেলেকে নিয়ে মনির মিয়ার বাড়িতে ভাড়া থাকেন। তাদের মধ্যে বড় মেয়ে ও আরেক ছেলের উপার্জনে তাদের সাতজনের সংসার চলে। এই পরিবারের ছোট মেয়ে দীর্ঘদিন ধরে একই এলাকার জীবন (১৬) ও লাদেন (১৭) নানাভাবে উত্ত্যক্ত করে আসছিল। প্রায় সময় কুপ্রস্তাব দিতো তারা। এলাকাবাসী বিষয়টি জানলেও ভয়ে কিশোর অপরাধীদের কিছু বলতে পারতেন না। কারণ তাদের প্রত্যেকের হাতে দেশি-বিদেশি অস্ত্র থাকে। সাধারণ বিষয়ে তারা অস্ত্র নিয়ে প্রকাশ্যে মহড়া দেয়।
আহত গার্মেন্টকর্মী বলেন, রোববার রাত সাড়ে ৯টার সময় জীবন ও লাদেনসহ প্রায় ১০/১৫ জন কিশোর আমাদের বাসায় আসে। তাদের কারও বাবার নাম জানি না। তবে আমাদের এলাকায় তারা কিশোর অপরাধী হিসেবে পরিচিত। তারা যখন আমাদের বাসায় আসে তখন আমি গার্মেন্টস থেকে বাসায় এসেছি। কিশোররা এসেই আমাদের ঘরে প্রবেশ করে প্রথমে জীবন আমার ছোট বোনকে জরিয়ে ধরে খাটে ফেলে দেয়।
তখন আমি চিৎকার করে জীবনকে ধাক্কা দিয়ে বোনকে জরিয়ে ধরি। এ সময় তারা আমাকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেয়। এরপর বোনকে টেনেহেঁচড়ে ঘর থেকে বের করে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে তারা। তখন আবারও আমি তাদের সামনে গিয়ে দাঁড়ালে জীবন আমার পেটে কয়েকটি ছুরিকাঘাত করে দলবল নিয়ে চলে যায়।
এ সময় আমার মা, বোন ও ছোট ভাইসহ আশপাশের লোকজন এসে আমাকে উদ্ধার করে প্রথমে নারায়ণগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে (ভিক্টোরিয়া) নিয়ে যায়। সেখান থেকে জরুরি বিভাগের চিকিৎসক ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দেন। ঢাকা মেডিকেলে নিয়ে যাওয়ার পর চিকিৎসক আঘাতের স্থানে ১৮টি সেলাই দিয়ে একদিন ভর্তি রাখেন।
তিনি আরও বলেন, এ ঘটনায় কিশোরদের ভয়ে থানায় গিয়ে তথ্য গোপন করে অভিযোগ না করে একটি জিডি করেছি। জিডির বিষয়টিও জীবন ও তার লোকজন জানতে পেরে সোমবার রাতে কয়েক দফা আমাদের বাড়িতে হামলা চালিয়ে টিনের ঘর ও দরজা জানালা কুপিয়ে জিডি তুলে নেয়ার হুমকি দিয়ে চলে যায়। জিডি না তুলে নিলে পরিবারের সকলকে কুপিয়ে হত্যার হুমকি দেয়।
এ বিষয়ে ফতুল্লা মডেল থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আসলাম হোসেন বলেন, কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যদের এমন কর্মকাণ্ডের অভিযোগ পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশের দুটি টিম পাঠানো হয়। তবে এলাকায় গিয়ে কাউকে পাওয়া যায়নি। অপরাধীদের দ্রুত গ্রেফতার করা হবে।