শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৪:৪২ পূর্বাহ্ন

বেড়িয়ে আসছে মাদক ব্যবসায়ী জুয়েলের অজানা কাহিনী!

সংবাদ নারায়ণগঞ্জ:- নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলা ফতুল্লা থানাধীন পাগলা নন্দলালপুরে ‘গ্যারেজের অন্তরালে জুয়েল শেখের রমরমা মাদক ও জুয়ার হাট!’ শিরোনামে একাধিক স্থানীয় প্রিন্ট পত্রিকা ও অনলাইন নিউজ পোর্টালে সংবাদ প্রকাশিত হওয়ার পর থেকেই বেরিয়ে এসেছে থলের বিড়াল! একাধিক মামলার আসামি মাদক ব্যবসায়ী জুয়েলের সীমাহীন অপকর্মের বিরুদ্ধে মুখ খুলতে শুরু করেছে এলাকাবাসী।

এ যেনো কেঁচো খুড়তে বেরিয়ে এল সাপ। জুয়েল ও তার পরিবারের কাছে নন্দলালপুর মেডিকেল গলির কয়েক শতাধিক বাসিন্দা জিম্মি। এই পরিবারের নিষ্ঠুরতার অত্যাচার থেকে বাদ যায়নি মসজিদ, মাদ্রাসা ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। শুধু তাই নয় জুয়েল একটি ট্রাকের গ্যারেজে মাদক ও জুয়ার পাশাপাশি গড়ে তুলেছেন ইট, বালু, সিমেন্ট ও ইন্টারনেট সহ চোরাই তেল ডিজেল, মবিল, কেরোসিনের অবৈধ বাণিজ্য। ট্রাক ড্রাইভারদেরকে জিম্মি করে বিক্রি করে সেইসব চোরাই তেল।

এলাকার স্থানীয় বাসিন্দাদেরকে জিম্মি করে বিক্রি করে ইট, বালু, সিমেন্ট ও ইন্টারনেট। এখানেই শেষ নয়, এই গুনধর সন্তান জুয়েলের জন্য বৃদ্ধ বাবা ও তার ভাই ডায়মন্ডকেও খাটতে হয়েছে জেল। এই পরিবারের নিষ্ঠুরতা থেকে চিরতরে মুক্তি চায় এলাকাবাসী।

জানা যায়, সরকার বিরোধী বিএনপি জামায়াতে গ্রেনেড বিস্ফোরণ, চাঁদাবাজী, হত্যার চেষ্টা সহ একাধিক মামলার আসামি এই শিবির কর্মী জুয়েল শেখ। শুধু জুয়েলই নয় রয়েছে তার পরিবারের নিষ্ঠুরতার অসংখ্য প্রমাণ। মানুষ কতটুকু পাষাণ হলে দান করা মসজিদের মাইক খুলে নিতে পারে। যেমনটা করেছেন জুয়েলের বাবা ইদ্রিস। বেশকিছু দিন আগে মেডিকেল গলির ভিতরে একটি এতিমখানা মাদ্রাসা ও মসজিদে ইদ্রিস এক হাজার টাকা দান করেন।পরে এলাকাবাসীর সকালের সহযোগিতা ও দানের টাকা দিয়ে মসজিদে কয়েকটি মাইক ক্রয় করেন কমিটি।

হঠাৎ একদিন ইদ্রিসের কথামতো নামাজের জামাত ইমাম দেরিতে না কায়েম করাতে তিনি উত্তেজিত হয়ে মসজিদের মাইক খুলে নিয়ে যায় এবং ইমামকে বিভিন্ন ধরনের হুমকি প্রদান করে ধর্মীয় শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দেন। মাদক সম্রাট জুয়েলের বাবা ইদ্রিস শেখের কথামতো কাজ না করলে নাকি পারতে হয় বড় ধরনের বিপদে। এমন পাষবিক নির্যাতনের অসংখ্য অভিযোগ ও তথ্য বেড়িয়ে আসছে তাদের পরিবারের বিরুদ্ধে।

নাম প্রকাশ্যে অনিচ্ছুক এক ব্যক্তি বলেন, চিতাশাল নুরবাগ এলাকার শীর্ষ মাদক ব্যবসায়ী, ফতুল্লা মডেল থানা পুলিশের সাথে বন্ধুক যুদ্ধে পায়ে গুলিবৃদ্ধ হওয়া লিখনের মাধ্যমে মাদক ব্যবসায় আসেন জুয়েল শেখ। তার মাদক ব্যবসার পার্টনার লিখন গ্রেফতার হলেও জুয়েল রয়েগেছেন ধরাছোঁয়ার বাইরে। হঠাৎ পাল্টে ফেলেন কৌশল, মাদক আনা-নেওয়ায় সহজ মাধ্যম হিসেবে একটি পরিত্যক্ত জায়গা ভাড়া নিয়ে গড়ে তুলেন একটি ট্রাকের গ্যারেজ। ঘুরে যায় জুয়েলের ভাগ্যের চাকা। বিভিন্ন সময় গ্যারেজে যাতায়াত করা পরিবহনের মাধ্যমে সরবরাহ করে মাদকের বিশাল চালান। গ্যারেজ থেকে জুয়েলের মাধ্যমে পাইকারি চলে যায় নারায়ণগঞ্জ ও মুন্সীগঞ্জের সহ আশপাশের এলাকায়। বছর খানিক আগে তার গ্যারেজে যাতায়াত করা একটি ট্রাক থেকে রাকিব ও তার সহযোগীকে ৭০ কেজি গাজাসহ গ্রেফতার করে ফেনী র‍্যাব-৭ তারা এখন জামিনে আছেন।

সরজমিনে গিয়ে জানা যায়, একসময়ের সক্রিয় শিবির কর্মী ও মাদক ব্যবসায়ী জুয়েলের ভয়ে মেডিকেল গলি এলাকায় সরকার দল ক্ষমতা থাকাকালীন আওয়ামী লীগের বিভিন্ন অনুষ্ঠানে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মজিবর রহমানের ভাষণ বাজাতেও রয়েছে এই শিবির কর্মীর নিষেধাজ্ঞা। অভিযোগ রয়েছে, এলাকায় ডেলিলেবার হিসাবে যারা কাজ করে তাদের কাছথেকে একশত টাকা করে চাঁদা নেওয়া হয়। এমন গুনধর ছেলের বিভিন্ন অপকর্মের কারণে অনেক আগেই বিয়ের বয়স অতিবাহিত হলেও দূর্ভাগ্য বসত বিয়ের পীড়িতে বসতে পারেনি এই মাদক সম্রাট জুয়েল। কয়েক দিন আগে নয়ামাটি ভাবির বাজার এলাকায় দুই যুবককে কুপিয়ে হত্যার চেষ্টার ঘটনার মূলহোতা এই জুয়েল। তার বিরুদ্ধে ফতুল্লা মডেল থানায় আরেকটি মামলা দায়ের হয়েছে। এর পরথেকে মাদক সম্রাট জুয়েল আত্মাগোপনে রয়েছেন বলেও জানাযায়। আর এইসব অপকর্ম ঢাকতে জুয়েল নিজেকে কখনো সাংবাদিক, রাজনৈতিক, কখনোবা চেয়ারম্যান মনিরুল আলম সেন্টুর লোক হিসাবে নিজেকে বিভিন্ন স্থানে ও প্রশাসনের সামনে যাহিল করে। একজন মাদক ব্যবসায়ী ও গ্রেনেড বিস্ফোরণ মামলার আসামি জামাত শিবির কর্মী এলাকাবাসীকে জিম্মি করে অপরাধ মূলক কর্মকান্ড চালিয়ে যাচ্ছেন। এই ভয়ংকর মাদক ব্যবসায়ী জুয়েলকে গ্রেফতারের দাবী জানিয়েছেন এলাকাবাসী।

নিউজটি শেয়ার করুন...


© 2022 Sangbadnarayanganj.com - All rights reserved
Design & Developed by POPULAR HOST BD