শনিবার, ২৭ জুলাই ২০২৪, ০৫:৫৮ পূর্বাহ্ন

সংবাদ শিরোনাম :
আদালতে আনা হয়নি জাকির খানকে, আদালতের বাহিরে বিক্ষোভ মিছিল রূপগঞ্জে পিকনিকে ট্রলারে সন্ত্রাসী হামলা:দুইদিন পর শীতলক্ষ্যা নদী থেকে যুবকের মরদেহ উদ্ধ সায়েন্স ল্যাব এলাকায় শিক্ষার্থী-ছাত্রলীগ ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া কোটা সংস্কারের দাবিতে রাজধানীর বিভিন্ন সড়ক অবরোধ করেছে শিক্ষার্থীরা সোনারগাঁয়ে মেয়েকে ধর্ষণের ঘটনায় বাবার যাবজ্জীবন কারাদণ্ড সাদিক অ্যাগ্রোর মালিকসহ সাতজনের বিরুদ্ধে দুদকের মামলা একই রশিতে গলায় ফাঁসি দিয়ে স্বামী-স্ত্রীর আত্মহত্যা ছাগলকাণ্ডে মতিউর রহমানের সম্পত্তি ক্রোকের আদেশ ফতুল্লায় মাদক ব্যবসায়ীদের হামলায় যুবলীগ নেতা আহত ফতুল্লায় আওয়ামী লীগ নেতা হত্যার ঘটনায় আরো ৯ জন গ্রেপ্তার

আলআমিনের বিরুদ্ধে ডিসি-এসপি, ইউএনও-ওসি’র কাছে অভিযোগ

সংবাদ নারায়ণগঞ্জ:- নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলাধীন বক্তাবলী ইউনিয়নের প্রসন্ন নগর গ্রামের ‘গাড়া বাড়ির’ আলআমিন সিদ্দিকীর বিরুদ্ধে জেলা প্রশাসক, জেলা ম্যাজিষ্ট্রেট, জেলা পুলিশ সুপার, স্থানীয় সরকার বিভাগের উপ-পরিচালক, সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও ফতুল্লা মডেল থানা পুলিশের কাছে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। ইউনিয়নেনর ৮নং ওয়ার্ডের মেম্বার ও প্যানেল চেয়ারম্যান-২ মোহাম্মদ সেকান্দর আলী রানা এ অভিযোগ দায়ের করেন।

অভিযোগে তিনি উল্লেখ করেন, আমি বক্তাবলী ইউনিয়ন এর ৮নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য ও প্যানেল চেয়ারম্যান-২ হিসেবে দায়িত্ব পালন করছি এবং প্রসন্ননগর গ্রামের একজন স্থায়ী বাসিন্দা। ঐতিহ্যবাহী প্রসন্ননগর গ্রাম বাসীর পক্ষে আমি জানাচ্ছি যে, প্রসন্ননগর গ্রামটি একটি ঐতিহ্যবাহী গ্রাম।

বিগত অনুমানিক ২০০ বছর পূর্ব থেকে এই গ্রামের নাম প্রসন্ননগর গ্রাম হিসাবে বহুল পরিচিত। এই গ্রামের নামে পুরাতন দলিলপত্র, সিএস, এসএ, আরএস পর্চা, প্রাইমারী স্কুল, বহু মসজিদ মাদ্রাসা আছে। এই গ্রামের সকল নাগরিক তাদের জাতীয় পরিচয় পত্রে প্রসন্ননগর গ্রামের নামে পরিচিত। তাছাড়া গ্রামটির বহু নাগরিক প্রসন্ননগর গ্রামের ঠিকানায় পাসপোর্ট, পুলিশ ক্লিয়ারেন্স নিয়া বিদেশে অবস্থান করছে এবং গ্রামের চৌকিদারী ট্যাক্সে প্রসন্ননগর নামে ট্যাক্স গ্রহণ করা হয়।

সম্প্রতি, এই গ্রামের মৃত আব্দুল মন্নাফের ছেলে এ্যাড. আল আমিন সিদ্দিকী (৪৮) কিছু সহযোগীদের নিয়ে গ্রামটিকে তাদের বংশের নাম (পাজীনগর) বলে কয়েকটি জায়গায় সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের বিনা অনুমতিতে গাজীনগর নামে সাইনবোর্ড স্থাপন করে এবং গুগুল ম্যাপে ও আবহাওয়া অধিদপ্তরের এ্যাপসে গাজীনগর নাম করণ করে প্রসন্ননগর গ্রামটি তাদের বংশের নামে গাজী নগর নাম করণ করার চেষ্টা ও পায়তারা করছে। এই আল আমিন সিদ্দিকীর জাতীয় পরিচয় পত্রে, স্কুল কলেজ শিক্ষা সনদের গ্রামের নাম প্রসন্ননগর উল্লেখ থাকলেও সে নিজে নিজে ২০০ বৎসেরর ঐতিহ্যবাহী প্রসন্ননগর গ্রামকে হঠাৎ করে তার ইচ্ছামত গাজীনগর গ্রাম নাম করনের চেষ্টা ও পায়তারা করছে।

এছাড়া, প্রসন্ননগর গ্রামটির নাম পরিবর্তন হইলে গ্রামের সকল নাগরিকের জাতীয় পরিচয় পত্র, জন্মনিবন্ধন, পাসপোর্ট, দলিল পত্র, স্কুল সার্টিফিকেট পরিবর্তন করতে হবে, ফলে গ্রামের নিরিহ সাধারণ জনগণ চরম ভোগান্তিতে পড়বে। গ্রামের নাম পরিবর্তনের বিষয় নিয়ে প্রসন্ননগর গ্রাম বাসীর মধ্যে চরম উত্তেজনা বিরাজ করিতেছে।

যে কোন সময় বড় ধরনের ধাঙ্গা হাঙ্গামা ও সংঘর্ষের সৃষ্টি হতে পারে। আমি গ্রামটির একজন জনপ্রতিনিধি হিসাবে জেলা প্রশাসক, জেলা ম্যাজিষ্ট্রেট, জেলা পুলিশ সুপার, স্থানীয় সরকার বিভাগের উপ-পরিচালক, সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও ফতুল্লা মডেল থানা পুলিশের কাছে দ্রুত এই বিষয়ে পদক্ষেপ গ্রহণ করে অথবা সঠিক তদন্ত করে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহনের আবেদন জানাচ্ছি।

 

উল্লেখ্য, আল আমিনের এই অপকর্মের শিকার হতে শুরু করেছে প্রসন্ন নগর গ্রামের সাধারন মানুষ। এরই মাঝে গ্রামের নাম প্রসন্ন নগর লিখে যারা পাসপোর্টের জন্য আবেদন করছে তারা পাসপোর্ট পাচ্ছে না। ইতিমধ্যেই গ্রামের সাহিদা নামক এক মহিলাকে পাসর্পোট অফিস থেকে ফেরৎ পাঠানো হয়েছে। কারণ তিনি গ্রামের নাম প্রসন্ন নগর লিখেছেন। সার্ভারে এখন আর প্রসন্ন নগর আসছে না। তাই পাসপোর্ট করা যাচ্ছে না।

এদিকে, গ্রামের গন্যমান্য ব্যাক্তিরা জানিয়েছেন চরম নোংড়া মানিষকতার পাকনা ও গাড়া আলআমিন এবং তার ছোটো ভাই মিলেই এই কাজ করেছে। তারা দুই ভাই সব সময়ই গ্রামের সাধারন মানুষকে ছোটো করে দেখছে। বোকা ভাবছে গ্রামবাসীকে। তারা গ্রামের সবাইকে মূর্খ বলে গালি দেয়। যদিও গ্রামবাসী আলআমিনকে মেন্টাল আলআমিন বলেই ডাকে। তারা দুই ভাই যে এই অপকর্মটি করেছে তার অনেক প্রমান রয়েছে। সে তার নিজের বাড়ির সামনেই গাজী নগর লিখে সাইনবোর্ড লাগিয়েছে।

সেই সাইনবোর্ডে সে কি লিখেছে তার প্রমান রয়েছে গ্রামবাসীর হাতে। তাই সে যাই বলুকনা কেনো গ্রামবাসী তা মানবে না। তাদের দুই ভাইয়ের উপর গ্রামের যুবসমাজ বিক্ষুব্দ হয়ে আছে। তারা তাকে পেলেই গণপিটুনি দেবে বলে জানিয়েছে। তাই তারা দুই ভাই এখন গ্রামে যেতে সাহস পাচ্ছে না।

 

অপরদিকে, ইন্টারনেটে প্রসন্ন নগর নিউজ নামে একটি পেইজে লিখেছে, “ভাইরাস পাজি আলআমিন সিদ্দিক। জনগনের দাবি তাকে জুতা মারা হোক প্রকাশ্যে এবং এলাকা থেকে বের করা হোক পাজিটাকে। নয়তো প্রসন্ন নগরে যুবকরা মেনে নেবে না ওরে।” গ্রামটিতে এখন আলোচনার প্রধান বিষয় এটি। গ্রামবাসী এতোটাই বিক্ষুব্দ হয়ে উঠেছে যে যেকোনো সময় ওই এলাকায় চরম অঘটন ঘটে যেতে পারে। কারন গ্রামবাসী বহু বছর ধরেই এদের যন্ত্রনার মাঝে রয়েছে বলে তারা জানান।

গোটা গ্রামের নারী-পুরুষ নির্বিশেষে সকলেই এই অপকর্মের মূল হোতা আলআমিন সিদ্দিকী (৪৩) এবং তার ছোটো ভাই আনোয়া সিদ্দিকী (৩৯) এর উপর চরম ভাবে বিক্ষুব্দ হয়ে উঠেছে। গ্রামবাসী আরো জানিয়েছে, আলআমিন সিদ্দিকী গং কেবল গুগল ম্যাপে গ্রামের নাম পরিবর্তন করেই ক্ষান্ত হয়নি বরং ব্যানার, ফেস্টুন এবং দেয়াল লিখনের মাধ্যমে শত বছরের ঐতিহ্যবাহী প্রসন্ননগর গ্রামকে গাজী নগর বানানোর জন্য চেষ্ঠা করেছেন।

তবে এ সময়ে এসে গ্রামবাসীর প্রতিরোধের মুখে গা ঢাকা দিয়েছে আলআমিন ও তার ছোটো ভাই। তাই তারা অবিলম্বে এই সংকট সমাধানের জন্য স্থানীয় চেয়ারম্যান শওকত আলীর হস্তক্ষেপ কামনা করেছে।

এছাড়া, চেয়ারম্যান শওকত আলীর কাছে যারা গণস্বাক্ষর করে অভিযোগ দায়ের করেছেন তাদের মাঝে অন্যতম হলেন, স্থানীয় মেম্বার সেকান্দর আলী, আলী হোসেন, হযরত আলী, শহীদ উল্লাহ, মোহাম্মদ ফজল হক, মো: আলী আজগর, হাজী লিয়াকত মোল্লা, মো: উজ্জল বেপারী, জয়নাল আবেদীন, মো: আনোয়ার হোসেন, আলআমিন, সৈয়দ হোসেন, মো: আতাউর, আমিনুল সিকদার, মো: স্বপন, মো: আরিফ খান, শাহাদাত হোসেন, মামুন সরকার, মকবুল হোসেন, আজিজুল হক, মো: সাগর, সাদ্দাম হোসেন, দ্বীন ইসলাম, শাহিন, আতাউর, মো: সেলিম, আবুল হোসেন, আমজত, মজিবর, মামুনুর রশিদ জিহাদ, শরীফ হোসেন, আবদুল আলী বেপারী, ইসলাম বেপারী, দেলোয়ার মাদবর, মাসুম, সাহিদা, মনসুর মাদবর, আনোয়ার বেপারী, আমিনুল হক প্রমুখ।

এ বিষয়ে প্রসন্ননগর গ্রামের বাসিন্দারা জানিয়েছেন, বক্তাবলীর প্রস্ননগর গ্রামটি একটি ঐতিহ্যবাহী গ্রাম। অতীতে এই গ্রাম থেকে মোস্তফা প্রেসিডেন্ড বহু বছর বক্তাবলী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ছিলেন। পরবর্তীতে একই গ্রামের বাসিন্দা তাওলাদ হোসেনও এই ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ছিলেন। গ্রামের নামে ৫৩নং প্রসন্ন নগর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়টি রয়েছে।

গ্রামবাসী বলেন, আমাদের পূর্বপুরুষদের গ্রাম প্রসন্ননগর বিশেষ পরিচিত একটি গ্রাম। কিন্তু যে আলআমিন সিদ্দিকী এবং তার ছোটো ভাই এই অপকর্মটি করেছে তার তেমন কোনো বংশ পরিচয় বা বংশ মর্যদা নেই। তাদের বাড়িটি ‘গাড়াদের’ বাড়ি হিসাবে গ্রামবাসীর কাছে পরিচিত। সম্ভবত আলাআমিন এই ‘গাড়া’ পরিচয়টি মোছার জন্য এই অপকর্মে লিপ্ত হয়েছে। কিন্তু তারা একবার চিন্তাও করেনি এভাবে শত বছরের পূরনো একটি গ্রামের নাম পাল্টাতে গেলে গ্রামবাসী কি ধরনের সমস্যায় পড়তে পারে। তারা কেবল এবারই এই অপকর্ম করেনি বরং অতীতেও বার বার গ্রামবাসীর সাথে অযথা ঝগড়া বিবাধে লিপ্ত হয়েছে। তাই চেয়ারম্যান শওকত আলী যদি এখনই এ বিষয়ে কঠোর ব্যাবস্থা না নেন তাহলে বিক্ষুব্দ গ্রামবাসী আরো কঠোর আইনানুগ ব্যাবস্থা গ্রহন করতে বাধ্য হবে।

এদিকে এ বিষয়ে জানতে আলআমিন সিদ্দিকীকে টেলিফোন করলে তিনি সব অভিযোগ অস্বীকার করেন।

নিউজটি শেয়ার করুন...


© 2022 Sangbadnarayanganj.com - All rights reserved
Design & Developed by POPULAR HOST BD