বুধবার, ১১ ডিসেম্বর ২০২৪, ১০:৩৯ অপরাহ্ন
সংবাদ নারায়ণগঞ্জ:- ফতুল্লায় উৎকোচ নিয়ে মাদক ব্যবসায়ীকে ছেড়ে দিয়েছে ফতুল্লা মডেল থানা পুলিশ।
গত (৮ সেপ্টেম্বর) শুক্রবার আটকের কয়েক ঘণ্টা পর ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে না জানিয়ে তাঁদের ছেড়ে দেওয়া হয়। ফতুল্লা স্টেডিয়াম সংলগ্ন এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
মাদক ব্যবসায়ীকে আটক করে উৎকোচের বিনিময়ে ছেড়ে দেওয়ার ঘটনায় এলাকাবাসীর মাঝে বিরূপ প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে।
জানা গেছে, এসআই কাজী রেজাউল শুক্রবার দুপুরে ফতুল্লা স্টেডিয়াম সংলগ্ন এলাকায় দায়িত্ব পালনকালে চার মাদক ব্যবসায়ীকে আটক করেন। তাঁদের থানায় না নিয়ে গিয়ে পুলিশের গাড়িতে করে বিভিন্ন স্থানে ঘোরাঘুরি করে। কয়েক ঘণ্টা পর টাকার বিনিময়ে শীর্ষ মাদক ব্যবসায়ী অয়ন সহ তিন জনকে ছেড়ে দেওয়া হয়। তৌফিক নামের একজনকে মাদক মামলায় কোর্টে প্রেরণ করা হয়।
এ ঘটনাটি স্থানীয় সাংবাদিকের নজরে পড়লে ওই সাংবাদিক ফতুল্লা মডেল থানার এসআই কাজী রেজাউলের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন এ বিষয়ে থানায় গিয়ে তথ্য নেন। কিন্তু এসআই কাজী রেজাউল আটককৃত চারজনকে থানায় না নিয়ে গিয়ে সাইনবোর্ডের দিকে রওনা হন। তখন তিনি তাদেরকে ফলো করে সাইনবোর্ডে গিয়ে উপস্থিত হন। তখন জানতে চাইলে এসআই রেজাউল বলেন তাদের কাছে ইয়াবা পাওয়া গেছে। আমি সেখান থেকে চলে আসি। পরবর্তীতে আমি রাতে আটক হওয়া সেই মাদক ব্যবসায়ী অয়নকে এলাকায় দেখতে পেয়ে এসআই রেজাউলকে ফোন দিয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন তাদের কাছে মাদক পাওয়া যায়নি তাই তাদেরকে ছেড়ে দিয়েছি। তৌফিকের কাছে মাদক পাওয়া গেছে তাকে মামলা দিয়েছি। অয়ন সহ তিনজনকে টাকার বিনিময়ে ছেড়ে দেওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে এসআই রেজাউল বলেন, আপনার কি সমস্যা আপনি এত কথা বলছেন কেন। এ বিষয় নিয়ে বেশি বাড়াবাড়ি করলে চাঁদাবাজি মামলা দিয়ে দিব। সাংবাদিক গিরি আমাকে দেখাইয়ে না বলে আমার মাকে গালি দেন। এমনটি সংবাদ নারায়ণগঞ্জকে দেওয়া তার বক্তব্যে বলেন তিনি।
এ বিষয়ে জানতে অয়নের নানা দেলোয়ার মোল্লার মুঠোফোনে ফোন দিলে তিনি জানান, আমার ফতুল্লা স্টেডিয়াম সংলগ্ন একটি দোকান রয়েছে। দুপুরে আমার নাতি অয়ন দোকান পরিষ্কার করছিল। এ সময়ে এসাই রেজাউল আমার নাতিকে আটক করে নিয়ে যায়। কিছুক্ষণ পর আমার নাতি অয়ন ফোন দিয়ে বলে আমি পাগলা আছি তুমি আসো। আমি সেখানে গেলে আবার বলে সাইনবোর্ডে নিয়ে গেছে আমাকে। এ বলে ঘোরাঘুরি করতে থাকে। এক পর্যায়ে আমার কাছ থেকে পাঁচ হাজার টাকা নিয়ে আমার নাতি অয়নকে ছেড়ে দেয়।
ফতুল্লা মডেল থানার এসআই কাজী রেজাউল বলেন, মাদকদ্রব্য না পাওয়ায় আটকের কয়েক ঘণ্টা পর অয়ন, নাঈম ও রাজুকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। তৌফিক নামের একজনকে মামলা দিয়েছি। টাকা নিয়ে ছেড়ে দেওয়ার এবং সাংবাদিককে মামলার হুমকি ও সাংবাদিকের মাকে গালি দেওয়ার বিষয়টি অস্বীকার করেন। সংবাদ প্রকাশ না করার জন্য অনুরোধ করেন তিনি।
এ বিষয়ে ফতুলা মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) নূরে আজম মিয়ার কাছে জানতে চাইলে তিনি জানান, টাকা নিয়ে মাদক ব্যবসায়ীকে ছেড়ে দেওয়ার বিষয়টি আমার জানা নেই। সাংবাদিককে হুমকি ও তার মাকে গালি দেওয়ার বিষয়ে তিনি বলেন, একজন সাংবাদিক এ বিষয়ে আমাকে ফোন দিয়েছিল সাংবাদিকের মাকে তুলে গালি দেওয়ার বিষয়টি আমি জানিনা। যদি গালি দিয়ে থাকেন মোটেও তিনি ভালো কাজ করেননি। কারণ মা সবারই রয়েছে। আর সাংবাদিকরা হল পুলিশের সবচেয়ে কাছের লোক।