শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৫:২০ পূর্বাহ্ন

ঘরের টিন বেচে ‘গাঁজা’ খেলেন স্বামী-স্ত্রী

সংবাদ নারায়ণগঞ্জ:- গাড়ি চালিয়েই জীবিকা নির্বাহ করেন নাজিম। করেছেন বিয়েও। কিছুদিন হলো তাকে গাড়ি চালাতে দিচ্ছেন না কেউ। নাজিম একজন মাদকসেবী বলে অভিযোগ মালিকদের। মা-বাবারও একই অভিযোগ। ছেলের ভয়ে বাড়ি ছেড়েছেন তারা। থাকেন আশ্রয়ণ প্রকল্পে।

টাকা না থাকায় মাদক সেবন করতে পারছিলেন না নাজিম। তাই ‘মাদকের টাকা’ জোগাড় করতে ঘরের টিন খুলে বিক্রি করেছেন তিনি। এ নিয়ে এলাকায় চলছে নানা আলোচনা-সমালোচনা। এখন ঘরের খুঁটি বিক্রির চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন বলে অভিযোগ প্রতিবেশীদের।

নাজিমের বাড়ি টাঙ্গাইলের মির্জাপুর পৌরসভার ৬ নম্বর ওয়ার্ডের বাইমহাটি গ্রামে। তার বাবার নাম আবু সাইদ কুলু। সোমবার সকালে সরেজমিনে গিয়ে এসব অভিযোগের সত্যতা মেলে।

বাবা আবু সাইদ কুলুর দাবি, প্রায় এক লাখ টাকা খরচ করে রঙিন টিন দিয়ে ঘর নির্মাণ করেন। মাদকের টাকার জন্য নাজিম নিয়মিত তাদের ওপর অত্যাচার-নির্যাতন চালানো শুরু করে। টাকা না দিলে বিভিন্নভাবে হত্যার হুমকি দেয়। এর মধ্যে সরকার থেকে দেওহাটা আশ্রয়ণ প্রকল্পে জমিসহ ঘর দিলে তিনি স্ত্রী সন্তানদের নিয়ে সেখানে চলে যান। নাজিম স্ত্রীকে নিয়ে এ বাড়িতেই থাকে। গাড়ি চালাতে না পেরে মাদকের টাকা জোগাড় করতে ঘরের বেড়ার টিন খুলে বিক্রি করতে শুরু করে। দু-একটা করে টিন খুলে বিক্রি করতে থাকে। তিন মাসের মধ্যে ঘরের সব টিন বিক্রি করে দিয়েছে।

নাজিমের চাচা আমজাদ হোসেন বলেন, ঘরটি ৩৫ হাজার টাকা দাম হয়েছিল। কিন্তু ওর মা বিক্রি করেননি। প্রতিদিন ১-২ ফাইল করে টিন খুলে বিক্রি করতে করতে সব টিন বিক্রি শেষ। নাজিম ও তার স্ত্রী একসঙ্গে মাদক সেবন করে বলে অভিযোগ করেন তিনি।

একই অভিযযোগ নাজিমের বড় ভাই সাইফুলেরও। তার ঘরের টিনও খুলে বিক্রি করে দিয়েছে বলে অভিযোগ তার। প্রতিবাদ করলে হত্যার হুমকি দেয় বলে দাবি সাইফুলের।

নাজিমের স্ত্রী নিজের মাদক সেবনের বিষয়টি অস্বীকার করেন। তবে স্বামী নাজিম গাঁজা সেবন করে বলে তিনি জানতে পেরেছেন।

অভিযুক্ত নাজিম বলেন, তিন ভাইকে অটোরিকশা কিনে দিয়েছেন বাবা-মা। আমাকেও একটা অটোরিকশা কিনে দিতে বলেছিলাম। ঘরটি বিক্রি করে একটি অটোরিকশা কিনে দিতে বলেছিলাম। বাবা-মা রাজি হননি। টাকার প্রয়োজন হওয়ায় টিন খুলে বিক্রি করেছি।

অভিযোগ পেলে আনি ব্যবস্থা নেবেন বলে জানিয়েছেন মির্জাপুর থানার ওসি শেখ রিজাউল হক।

উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভূমি) মো. জোবায়ের হোসেন বলেন, মাদক সেবনের প্রমাণ পেলে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মধ্যমে তাকে শাস্তি দেওয়া হবে।

নিউজটি শেয়ার করুন...


© 2022 Sangbadnarayanganj.com - All rights reserved
Design & Developed by POPULAR HOST BD