শনিবার, ০৯ নভেম্বর ২০২৪, ০১:০৩ পূর্বাহ্ন
সংবাদ নারায়ণগঞ্জঃ- ভারতের রাজধানী দিল্লিতে অজ্ঞাতপরিচয় একজন ব্যক্তি নাগরিকত্ব আইনের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ প্রদর্শনরত জামিয়া মিলিয়া ইসলামিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রছাত্রীদের ওপর প্রকাশ্য দিবালোকে গুলি চালিয়েছে। ওই ব্যক্তির রিভলভার থেকে চালানো গুলি একজন ছাত্রের হাতেও লেগেছে, তাকে হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে।
(৩০ জানুয়ারী) বৃহস্পতিবার দুপুরে জামিয়ার ক্যাম্পাসের ঠিক বাইরে রাস্তার ওপরেই বিশাল পুলিশ বাহিনীর সামনেই এই ঘটনা ঘটে।
ছাত্রদের ও সংবাদমাধ্যমের তোলা ভিডিওতে দেখা গেছে, ওই ব্যক্তি যখন রিভলবার তাক করে বিক্ষোভকারীদের দিকে এগিয়ে যাচ্ছিল, তখন কয়েক গজ দূরেই দিল্লি পুলিশের বিরাট বাহিনী ঠায় দাঁড়িয়ে আছে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, গুলি চালানোর ঠিক আগে ওই ব্যক্তি চিৎকার করে ছাত্রদের উদ্দেশে বলে “ইয়ে লো আজাদি” (এই নাও তোমাদের স্বাধীনতা)।
ভারতের বিতর্কিত নাগরিকত্ব আইনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাতে জামিয়ার ছাত্রছাত্রীরা তখন আজ মোহনদাস করমচাঁদ গান্ধীর প্রয়াণ দিবসে তার সমাধিস্থল রাজঘাট অভিমুখে মিছিল করে যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন।
দিল্লি পুলিশ ওই মিছিলের অনুমতি দেবে কি দেবে কি না, তা নিয়ে শেষ মুহূর্তেও ক্যাম্পাসে প্রবল উত্তেজনা ছিল। মোতায়েন করা হয়েছিল বিরাট পুলিশ বাহিনীও।
এরই মধ্যে ওই অজ্ঞাতপরিচয় ওই ব্যক্তি সেখানে বন্দুক হাতে চলে আসে এবং অত্যন্ত নাটকীয়তার মধ্যে ছাত্রছাত্রীদের দিকে তাক করে গুলিও চালিয়ে বসে।
এরপর পুলিশের কর্মীরা ছুটে গিয়ে তাকে জোর করে মাটিতে ফেলে কাবু করেন। তার হাত থেকে বন্দুক কেড়ে নেওয়া হয় এবং গ্রেপ্তার করা হয় – তবে তার পরিচয় সম্পর্কে এখনও কিছু জানানো হয়নি।
তার বন্দুকের গুলিতে যে ছেলেটি আহত হয়েছে, তার নাম শাদাব বলে জানা গেছে। সে জামিয়া মিলিয়া ইউনিভার্সিটিরই ছাত্র, এখন নিকটবর্তী হোলি ফ্যামিলি হাসপাতালে তার চিকিৎসা চলছে।
প্রত্যক্ষদর্শীদের তোলা ভিডিওতে তার হাত থেকে রক্ত ঝরার দৃশ্যও দেখা গেছে। অন্য ছাত্ররাই তাকে ধরাধরি করে তুলে নিয়ে হাসপাতালে নেওয়ার ব্যবস্থা করেন।
কীভাবে ব্যাপক পুলিশি উপস্থিতির মধ্যেই ছাত্রছাত্রীদের ওপর এভাবে দিনের আলোয় গুলি চালানো হল, ওই প্রতিষ্ঠানের ছাত্রছাত্রীরা যথারীতি তা নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন।
উত্তরপ্রদেশ পুলিশের সাবেক প্রধান বিক্রম সিং-ও ওই ঘটনার ভিডিও দেখে মন্তব্য করেছেন, “কীভাবে পুলিশ ২০ সেকেন্ডেরও বেশি সময় ধরে নীরব দর্শক হয়ে থাকল, তা আমার মাথাতেই ঢুকছে না!”
উল্লেখ্য, ভারতে গত প্রায় দেড় মাস ধরে নাগরিকত্ব আইন ও প্রস্তাবিত এনআরসি-র বিরুদ্ধে যে তুমুল বিক্ষোভ ও প্রতিবাদ চলছে, দিল্লির জামিয়া মিলিয়া ইসলামিয়া সেই বিক্ষোভের অন্যতম প্রধান কেন্দ্র হয়ে উঠেছে।
গত ১৫ ডিসেম্বর বিকেলে দিল্লি পুলিশ জামিয়ার ক্যাম্পাসে ঢুকে ছাত্রছাত্রীদেরও মারধর করে বলে অভিযোগ উঠেছিল। জামিয়ার নিকটবর্তী শাহীন বাগ এলাকায় এরপরই শুরু হয় লাগাতার ধরনা ও অবরোধ কর্মসূচী – যা এখনও অব্যাহত আছে।